২০১৬ সালের মতো আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও হস্তক্ষেপের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। দেশটির শীর্ষ এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নভেম্বরের নির্বাচনে চীন, রাশিয়া ও ইরান ‘হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে’ বলে সতর্ক করেছেন।
দেশটির ন্যাশনাল কাউন্টার ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি সেন্টারের (এনসিএসসি) পরিচালক উইলিয়াম এভানিনা শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, তিনটি দেশ ‘প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাবের মাধ্যমে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। আর এর মাধ্যমে ওই রাষ্ট্রগুলো নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে চায়’।
তিনি বলেন, ‘‘তারা (তিন দেশ) অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে নানা ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করতে চাইছে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর আমেরিকার ভোটাদের আস্থা নষ্ট করারও চেষ্টা করছে।”
এদিন তিনি ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবিরকে সাহায্য করতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পুরানো অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন। তবে ট্রাম্প এবং রাশিয়া উভয়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। যদিও নানা তদন্তে অভিযোগের পক্ষে শক্ত প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা এভানিনা বলেন, রাশিয়ার সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং রুশ টেলিভিশনে পরোক্ষভাবে ট্রাম্পের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। ইউক্রেইনের রুশপন্থি নেতারাও একই কাজ করছেন। সেখানে বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে।
অন্য দিকে চীন চাইছে ট্রাম্প পুনঃনির্বাচিত না হোন। কারণ বেইজিংয়ের কাছে ট্রাম্প অনেক বেশি ‘আনপ্রেডিক্টেবল’। অন্যদিকে ইরান অনলাইনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে বলে সতর্ক করেন এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
সব ঠিক থাকলে এ বছর ৩ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। অবশ্য কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যথাসময়ে ভোট গ্রহণ নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃত্যু উভয় তালিকাতেই শীর্ষে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মেইল-ইন ভোটিং বা ডাকযোগে ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে বিদেশি হস্তক্ষেপ, জালিয়াতি এবং ভুল ফল আসতে পারে উল্লেখ করে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
ট্রাম্প বলেছিলেন, মানুষের ভোট দেওয়ার মত ‘যথাযথ, সুরক্ষিত ও নিরাপদ’ পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
কিন্তু খোদ ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারাই তার এ পরামর্শ গ্রহণ করেনি। রিপাবলিকান নেতারা ভোট পেছানোর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী দেশটিতে নির্বাচন পেছানোর এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই।
কংগ্রেসের দুই কক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষেই কেবল নির্বাচন পেছানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রেও দেশটির সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন পড়েবে বলে মত অনেকে। তাই আগামী ৩ নভেম্বর নির্বাচন হবে ধরে নিয়েই জোর প্রচার চলছে।
শুক্রবার নিউ জার্সিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, তার প্রশাসন খুবই ঘনিষ্ঠভাবে বিষয়টির উপর নজর রাখছে। তিনি বলেন, “আমরা তাদের সবার উপর নজর রাখছি, আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে। রাশিয়া, চীন এবং ইরান সবাই চায় আমি হেরে যাই।”
নভেম্বরের ভোটে জিতে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে দারুণ আশাবাদী ট্রাম্প এবং তার দল। ডেমোক্রেটিক প্রার্থী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবার ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন