যুক্তরাষ্ট্রে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে করোনা। এখন পর্যযন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে ১ লাখ ৩১ হাজরের বেশি মানুষ মারা গেছে। প্রতিদিন নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছে ৫০ হাজার। এরই মধ্যে ৪ জুলাই স্বাধীনতা দিবসকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতির কোন কমতি রাখছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্ত্রী মেলেনিয়াকে নিয়ে মাউন্ট রাশমোরে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।
স্বাধীনতা দিবসকে স্বাগত জানাতে আগের রাতেই আকাশ ছেয়ে যাবে আতসবাজির আলোতে। সাক্ষী থাকবেন আনুমানিক সাড়ে ৭ হাজার মানুষ। স্বাভাবিক সময়ে এখানে এক দিনে ২৮ থেকে ৩২ হাজার মানুষ ভিড় করেন। রিপাবলিকান নেতা বলছেন, ‘যাদের ভয় করছে, তারা বাড়িতে থাকুন। কিন্তু যারা আসবে তাদের বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়া হবে। তবে পরতেই হবে এমন নয়। পারস্পরিক দূরত্ব অবশ্য মানা হবে না।’ এ প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে জানা যায় নর্থ ডাকোটায় সংক্রমিতের সংখ্যা তুলনায় কম, ৬ হাজার ৮৯৩ জন। মারা গিয়েছেন ৯৭ জন। কিন্তু মাউন্ট রাশমোরের অনুষ্ঠানে তো বিভিন্ন প্রদেশ থেকে অতিথিরা আসছেন, এই আশঙ্কার কোন জবাব নেই।
আজও হোয়াইট হাউসের করোনা উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফাউসি জানিয়েছেন, ভাইরাসটি এমন ভাবে তার মিউটেশন ঘটাচ্ছে, যে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে নাজেহাল মার্কিনরা। ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠরাও এখন তাঁর কথা না-শুনে মাস্ক পরছেন। সম্প্রতি ট্রাম্পের সমর্থনে ওকলাহোমায় ‘ব্ল্যাক ভয়েসেস ফর ট্রাম্প’ নামে সমাবেশ করেছিলেন রিপাবলিকান নেতা হারম্যান কেন। তিনি এখন করোনা নিয়ে হাসপাতালে। ট্রাম্পের প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত আরও অনেকে।
এদিকে এক-দু’সপ্তাহ হল বর্ণবৈষম্য ঘিরে চলা বিক্ষোভ কিছুটা কমে গেলেও এবার আবারো নতুন করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। জ্বলতে শুরু করেছে মার্কিন আদিবাসীদের ক্ষোভও। সাউথ ডাকোটার ব্ল্যাক হিলে এই মাউন্ট রাশমোর। মার্কিন জাতির কাছে পাহাড়টি ঔপনিবেশিকতার ও বর্ণবৈষম্যের প্রতীক। যুক্তরাষ্ট্রের আদি বাসিন্দাদের কাছে এই ‘কালো পাহাড়’ একটি পবিত্র স্থান। অন্তত ৬০টি জনজাতির বাস এখানে। ১৮৭০ সালে সোনার সন্ধান মেলার পরে আদি বাসিন্দাদের থেকে এলাকাটি ছিনিয়ে নেয় মার্কিন সরকার। পরবর্তী কালে এর গায়ে খোদাই করে গড়ে তোলা হয় চার শ্বেতাঙ্গ প্রেসিডেন্টের ৬০ ফুট দীর্ঘ মুখাবয়ব— জর্জ ওয়াশিংটন, টমাস জেফারসন, অ্যাব্রাহাম লিঙ্কন ও থিয়োডোর রুশভেল্ট। একটি আদিবাসী সংগঠনের প্রধান নিক টিলসেন বলেন, অই চার শ্বেতাঙ্গ যুক্তরাষ্ট্রের আদি বাসিন্দাদের হত্যা করেছিলেন। আমার পূর্বপুরুষেরা প্রাণ দিয়েছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন