পুলিশের ধাক্কায় অচেতন অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ওই বৃদ্ধ, তার মাথার নিচে জমাট বাঁধা রক্ত।
হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করেছে পুলিশ। তা নিয়ে গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যেই একবার ফের পুলিশি নৃশংসতার দৃশ্য ধরা পড়ল সেখানে। এ বার নিউইয়র্কের বাফেলোতে ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করতে দেখা গেল পুলিশকে। ধাক্কা মেরে ওই বৃদ্ধকে সিমেন্টে বাঁধানো রাস্তায় ফেলে দেয় পুলিশ। তাতে পড়ে গিয়ে তার কান থেকে রক্ত বেরতে শুরু করে। এই ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
বিক্ষোভ রুখতে বৃহস্পতিবার থেকে কার্ফু শুরু হয়েছে আমেরিকায়। তা সত্ত্বেও পুলিশি নৃশংসতা ও বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে সেখানে। কার্ফু অগ্রাহ্য করেই রাস্তায় নামছেন হাজার হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার বিকেলেও বাফেলোর সিটি হলের সামনে বিক্ষোভ দেখান একদল প্রতিবাদী মানুষ। সেখান থেকে তাদের হটাতে রাস্তায় নামে পুলিশ। দাঙ্গা রোখার বিশেষ পোশাক পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে তারা। ৫ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারও করা হয়। বিক্ষোভ হটিয়ে পুলিশ যখন ফিরে যাচ্ছিল, সেই সময়ই এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
গোটা ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সিমেন্টে বাঁধানো ফুটপাতের উপর দিয়ে এগিয়ে আসছে পুলিশবাহিনী। সেই সময় উল্টা দিক থেকে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ান এক বৃদ্ধ। কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকে দেখেই তেড়ে আসেন দুই পুলিশকর্মী। তাদের মধ্যে এক জন লাঠি হাতে ওই বৃদ্ধকে ধাক্কা মারেন। অন্যজন ধাক্কা মারেন হাত দিয়েই। তাতে টাল সামলাতে না পেরে রাস্তার উপর পড়ে যান ওই বৃদ্ধ। বাঁধানো রাস্তায় সজোরে তার মাথা ঠুকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে কান থেকে রক্ত বেরতে শুরু করে।
মাথার নিচে জমাট বাঁধা রক্তের উপরই নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকেন ওই বৃদ্ধ। তাকে দেখতে ঝুঁকে পড়েন অভিযুক্তদের মধ্যে একজন। কিন্তু অন্য জন তাকে বাধা দেন। তা দেখে আশেপাশের লোকজন চেঁচামেচি শুরু করে দেন। রক্তপাত বন্ধ না হলে বিপত্তি দেখা দিতে পারে, তাই অবিলম্বে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা উচিত বলে পুলিশকে জানান তারা। সেই মতো অ্যাম্বুল্যান্সে খবর দেয়া হয়। তড়িঘড়ি এসে ওই বৃদ্ধকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় অ্যাম্বুল্যান্স। এই মুহূর্তে তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেয়েছে।
সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়োটি সামনে আসতেই গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তাতে অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। বলা হয়, সাসপেন্ড থাকাকালীন বেতনও পাবেন না তারা।
এই ঘটনার নিন্দা করেছেন বাফেলোর মেয়র বায়রন ব্রাউন। তিনি বলেন, ‘‘ভিডিওটি দেখে অত্যন্ত বিব্রত বোধ করছি। পুলিশ কমিশনার বায়রন লকউডও গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত দুই অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বাফেলোর গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোও।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন