ভারতের রাজধানী দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের একটি সমাবেশে যোগ দেওয়া অন্তত তিনশো জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়ার পরে ওই ঘটনাটিকে ঘিরে সেদেশে মুসলমান বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ছে বলে উদ্বেগ বাড়ছে।
এরপরই আজ বিবিসি জানায়, ব্রিটেনে করোনাভাইরাস বিস্তারের পেছনে নিজেদের দায় স্বীকার করে নিয়েছে হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন ইসকন। মার্চের শুরুতে ব্রিটেনে সংগঠনটির একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী পাঁচজন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে।
খবরে বলা হয়, ব্রিটেনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ইসকনের পরোক্ষ ভূমিকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা আলোচনা-সমালোচনার পর সংগঠনটির পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে যে, মার্চে এক সমাবেশে যোগ দেয়া তাদের পাঁচজন সদস্য করোনাভাইরাসে মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
ইসকন ইউকে শাখার শীর্ষ কর্মকর্তা প্রাঘোসা দাসকে উদ্ধৃত করে সংগঠনটির প্রকাশনা ইসকন নিউজে বলা হয়েছে, মার্চের ১২ তারিখে লন্ডনের উপকণ্ঠে ইসকনের এক মন্দিরে তাদের একজন গুরুর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রায় হাজারখানেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। দু'দিন পর ১৫ মার্চ লন্ডনের কেন্দ্রে তাদের আরেকটি মন্দিরে শ্রুতিধর্ম প্রভু নামে প্রয়াত ঐ গুরুর স্মরণসভাতেও কয়েকশ' মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
ইসকন স্বীকার করেছে এখন পর্যন্ত তাদের যে ২১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং যে পাঁচজন মারা গেছেন- তারা সবাই ওই দুটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আক্রান্তদের মধ্যে ২০ এবং ৩০ বছর বয়সীসহ বিভিন্ন বয়সী সদস্য রয়েছেন।
শেষকৃত্যে অংশ নেয়া তাদের আরও সদস্য যে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন - সে আশঙ্কার কথা ইসকন কর্তৃপক্ষ উড়িয়ে দেননি। ব্রিটেনে ইসকনের সমাবেশ থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই খবর এমন সময় সামনে এসেছে যখন দিল্লিতে মার্চের প্রথমার্ধে মুসলমানদের তাবলিগ জামাতের সমাবেশকে ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
সে কারণেই ভারতের বেশকিছু মিডিয়ায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রিটেনে ইসকনের সমাবেশ নিয়ে ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছে। তবে মার্চের ১২ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে এত বড় সমাবেশ কেন তারা করল- তার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছে ইসকন কর্তৃপক্ষ।
ইসকন নিউজের রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাদের দোষারোপ করার আগে সমাবেশের সময়কালকে বিবেচনা নেয়া উচিত। তাদের যুক্তি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মার্চের ২৩ তারিখে, কিন্তু তাদের ওই শেষকৃত্য অনুষ্ঠানটি হয়েছে তারও ১০ দিন আগে।
এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য প্রধানত শিনচিওঞ্জি চার্চ অব জেসাস নামে একটি খ্রিস্টান গোষ্ঠীকে দায়ী করা হচ্ছে। তাদের একজন নেতার শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছিলেন কয়েক হাজার সদস্য, এবং বলা হচ্ছে সেখান থেকেই দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণের সূত্রপাত।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন