প্রতিদিন রাতের নির্দিষ্ট একটা সময়ে দেশের স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক-নার্সদের অভিবাদন জানাতে নিজেদের ঘরের বারান্দায়, জানালায় বা দরজায় দাঁড়িয়ে করতালি-নানা শব্দ করে থাকেন স্পেনের অবরুদ্ধ নাগরিকরা। এটি নাকি তাদের কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানানোর বহি:প্রকাশ!
শুধু অবরুদ্ধ নাগরিকই নন, রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে পুলিশও স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক-নার্সদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা জানিয়ে করতালি দিয়ে থাকে। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) মতো মরণব্যাধীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামায় তাদের এই অভিবাদন।
আসলে কৃতজ্ঞতা ছাড়া অন্য কিছু না জানানোর নেই। কেননা করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তোয়াক্কা না করেই স্পেনের স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক-নার্স দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আক্রান্তও হচ্ছেন। পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মধ্যে ১৪ শতাংশই স্বাস্থ্যকর্মী।
সাধারণ নাগরিকের পাশাপাশি এত স্বাস্থ্যকর্মীকে হাসপাতালে জায়গা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। যে কারণে সরকার মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী এমনকি অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের নিয়োগ দিয়েছে।
রাজধানী মাদ্রিদের হাসপাতালগুলোতে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রায় সবকয়টি হাসপাতালের আইসিইউতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
ইতোমধ্যে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সরকারের অধীনে নেওয়া হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় সম্মেলনকেন্দ্র ‘ফেরিয়া দে মাদ্রিদে’ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় অস্থায়ী হাসপাতাল করে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও রয়েছেন আতঙ্কের মধ্যে। এখন পর্যন্ত ৬৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন একজন। অবৈধ প্রবাসীদের সেবায় ১০ লাখ টাকা অনুদান দিচ্ছে স্পেনের বাংলাদেশ দূতাবাস।
দেশটিতে চলমান পনের দিনের জরুরি অবস্থা আরও ১৫ দিন বৃদ্ধি করেছেন প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। জরুরি অবস্থা আরও বাড়ানো যায় কি না, সে চিন্তাও করছে সরকার।
আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত স্পেনে মৃত্যুর মিছিলে সামিল হয়েছেন আরও ৩৪৫ জন। দেশটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৩৪৮ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১২ হাজার ৬৫, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৬ হাজার ৭৪৩ জন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন