ফিলিস্তিন ও ইসরাইলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত কথিত ‘শতাব্দীর সেরা সমঝোতা’ বা ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ প্রত্যাখ্যান করেছেন ফিলিস্তিনিরা।
ওয়াশিংটনে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও বিরোধীদলীয় নেতা বেনি গান্তজের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে পরিকল্পনা প্রকাশ্যে পেশ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতায়েহ বলেছেন, ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহু তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে এ শান্তি পরিকল্পনাকে কাজে লাগাচ্ছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, আমরা এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করছি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এতে জড়িত না হওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদাইনাহ জোর দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা মেনে নেবেন না। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমাদের সরকার ফিলিস্তিনকে ভাগ বাটোয়ারা করার প্রচেষ্টা নস্যাৎ করবে।
আবু রুদাইনাহ বলেন, ফিলিস্তিনের নেতারা বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থাসহ সমাজের সব পর্যায়ের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং পরিপূর্ণভাবে এই চুক্তি প্রত্যাখ্যানের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
ফিলিস্তিন সরকারের এই মুখপাত্র আরও বলেন, ট্রাম্পের এ চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলে মধ্যপ্রাচ্য ভয়াবহ রকমের অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। এজন্য তিনি ফিলিস্তিনের অবস্থানের প্রতি আরব দেশগুলোকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানান।
ঐতিহাসিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ইসরাইলঘেঁষা। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।
এর পর ইসরাইলের সঙ্গে আর কোনো শান্তি আলোচনায় মার্কিন মধ্যস্থতা মানবে না বলে ঘোষণা দেন ফিলিস্তিনিরা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বারবারই ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি নামে পরিচিত একটি শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণার কথা বলা হয়েছে।
ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও জামাতা জারেড কুশনার এ পরিকল্পনার নেপথ্যে কাজ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে এ পরিকল্পনার বিভিন্ন অংশ সংবাদমাধ্যমে উঠে এলেও যুক্তরাষ্ট্র তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিরা প্রথমে এ পরিকল্পনা নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। প্রথমে তারা এটি চাইবে না।
তবে এতে তাদের লাভ হবে। বাস্তবে তাদের জন্য এটি খুবই ভালো। তাদের ছাড়া শান্তি পরিকল্পনা চুক্তি করতে পারব না।
ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা পশ্চিমতীর, পূর্ব জেরুজালেম এবং গাজায় স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার ফিলিস্তিনিদের আশা গুঁড়িয়ে দেবে।
তারা বলছেন, ফিলিস্তিনিদের ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আর ফিলিস্তিনিদের ছাড়া কোনো শান্তি পরিকল্পনাই ফলপ্রসূ হতে পারে না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন