বিশ্বের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় এবার প্রথম স্থানে উঠে এসেছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ার নাম। আর সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয় এমন দেশের মধ্যে যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের দেশ নিউজিল্যান্ড।
দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) বৃহস্পতিবার দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করে, সেখানে এই অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে। টিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৪তম। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে ছিল ১৩তম অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান একমাত্র আফগানিস্তানের ওপরে।
00:00
% Buffered
00:03 / 00:29
Copy video url
Play / Pause
Mute / Unmute
Report a problem
Language
Mox Player
সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সোমালিয়ার পর ১২ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ সুদান, ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে সিরিয়া, ১৫ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে ইয়েমেন, ১৬ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে ভেনেজুয়েলা, ১৬ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে সুদান, একই স্কোর নিয়ে সপ্তম অবস্থানে ইকুয়াটরিয়াল গুয়েনা, ১৬ স্কোর নিয়ে অফগানিস্তান অষ্টম, ১৭ স্কোর নিয়ে কোরিয়া (উত্তর) নবম, ১৮ স্কোর নিয়ে লিবিয়া দশম স্থানে রয়েছে। ১৮ স্কোর নিয়ে লিবিয়ার পর যথাক্রমে রয়েছে হাইতি, গুয়েনা বিসাও ও কঙ্গো।
২৬ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সমঅবস্থানে আছে অ্যাঙ্গোলা, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস, ইরান, মোজাম্বিক ও নাইজেরিয়া।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় আফগানিস্তানে। তাদের স্কোর ১৬। এরপরই বাংলাদেশের অবস্থান। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের তুলনায় অন্য যেসব দেশ খারাপ অবস্থানে আছে তাদের বেশিরভাগ যুদ্ধ বিধ্বস্ত কিংবা অভ্যন্তরীণ সংঘাতে জর্জরিত।
দুই প্রতিবেশী ভারত এবং মিয়ানমারের অবস্থান বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। টিআইয়ের সূচকে ভারতের স্কোর ৪১। ১৮০টি দেশের মধ্যে নিম্নক্রম অনুয়ায়ী অবস্থান ৮৭তম। অন্যদিকে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে নিম্নক্রম থেকে মিয়ানমারের অবস্থান ৫০তম।
দুর্নীতির সুচকে ০ স্কোর সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ এবং ১০০ স্কোর সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ। এবার ডেনমার্ক ও নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৮৭। ২০১৮ সালেও এ দুটি দেশ শীর্ষ স্থানে ছিল। ওই বছর ডেনমার্কের স্কোর ৮৮ এবং নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৮৭ ছিল। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোনো দেশ সম্পূর্ণ স্কোর পায়নি।
এ সূচক যেসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় সেগুলোর কয়েকটি হচ্ছে - ঘুষ লেনদেন, সরকারি ব্যবস্থাকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা, সরকারি সম্পদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং স্বজনপ্রীতি
৮৬ স্কোর পেয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফিনল্যাণ্ড; এবং তৃতীয় স্থানে একই স্কোর ৮৫ নিয়ে যৌথভাবে রয়েছে সিঙ্গাপুর, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির ধারণা সূচকে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ স্কোর নিয়ে আগের অবস্থানে রয়েছে। তবে র্যাংকিংয়ে পরিবর্তন এসেছে।
বাংলাদেশের এই অবস্থা 'বিব্রতকর' বলে বর্ণনা করেছেন ইফতেখারুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ও গবেষণা উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, উপদেষ্টা নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিষদ ড. সুমাইয়া খায়ের ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
ট্রান্সপারেন্সিইন্টারন্যাশনাল ১৯৯৫ সাল থেকে দুর্নীতির ধারণাসূচক প্রকাশ করছে। এ সূচকে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত করা হয় ২০০১ সালে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন