ডোপিংয়ের দায়ে অ্যাথলেটিকসের গত ৪ বছর ধরেই নিষিদ্ধ রাশিয়া। ২০১৮ সালের অলিম্পিকে দেশটির ১৬৮ জন ক্রীড়াবিদ নিরপেক্ষ পতাকা নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন অ্যাথলেটিকসের বিভিন্ন ইভেন্টে।
তবু শিক্ষা নেয়নি রাশিয়া, একই ধরনের অপরাধে এবার এসেছে আরও বড় নিষেধাজ্ঞা। ডোপিংয়ে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসর থেকে ৪ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে রাশিয়াকে। ফলে ২০২০ টোকিও অলিম্পিক এবং ২০২২ সালের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপেও অংশ নিতে পারবে না দেশটি।
এ নিষেধাজ্ঞার খবর জানিয়ে রাশিয়াকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছিলেন ওয়ার্ল্ড এন্টি-ডোপিং এজেন্সির (ওয়াডা) প্রেসিডেন্ট ক্রেগ রিডি। তিনি বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ক্রীড়াজগতে ডোপিং ব্যাপারটাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে রাশিয়া। ক্রীড়াঙ্গনে তারা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি হারিয়ে ফেলেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি করার সুযোগ দিয়েছি। সুস্থ স্বাভাবিক অ্যাথলেট গঠনের জন্য বোঝানো হয়েছে। অথচ ঘটিয়েছে ঠিক উল্টো। তারা বারবার প্রতারণা করেছে। সবকিছু অস্বীকার করেছে। তার ফল তো পেতেই হবে।’
আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসর থেকে রাশিয়া নিষিদ্ধ হলেও দেশটির অ্যাথলেটরা ঠিকই খেলতে পারবেন সব আসরেই। তবে সেটি রাশিয়ার পতাকা নয়, ২০১৮ সালের অলিম্পিকের মতো নিরপেক্ষ পতাকা হাতে নিয়ে। এটি আবার মানতে নারাজ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি ওয়াডার দেয়া নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দিয়ে হুঙ্কার ছেড়েছেন স্বপক্ষে। জানিয়েছেন রাশিয়ার পতাকাতেই খেলবে তার দেশের ক্রীড়াবিদরা। পুতিনের ভাষ্য, ‘সবকিছুর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করার একটা দিক। রাশিয়ান অলিম্পিক কমিটি বা অন্য কোনো ক্রীড়া ফেডারেশনকে তো আলাদাভাবে কিছু বলা হয়নি। তাই দেশের পতাকা নিয়েই আমাদের অ্যাথলেটরা টোকিওতে (২০২০ সালের অলিম্পিক) নামবে। কারও অধীনে নয়।’
ওয়াডার কাছ থেকে নিষেধাজ্ঞা পেলেও, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২১ দিনের মধ্যে আবেদন করতে পারবে রাশিয়া। যদি তারা সেটা করে, তবে এই আবেদন চলে যাবে কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসের (সিএএস) কাছে। পুতিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যেহেতু তাদের কোনো দোষ নেই- তাই অবশ্যই আবেদন করে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেবেন তিনি।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সিএএসের কাছে আবেদন করার সব কারণই আছে আমাদের। এ বিষয়ে আরও অনেক কিছুই বিবেচনা করতে হবে। তবে সবার আগে দেখতে হবে বিশেষজ্ঞরা, আইনজীবীরা কী বলে। আমরা আমাদের পার্টনারদের সাথেও এ নিয়ে আলোচনা করবো। আমাদের কোনো অ্যাথলেট যদি দোষী হয়েও থাকে, শাস্তি হবে তার ব্যক্তিকেন্দ্রিক। ব্যক্তির দায়ে পুরো দেশকে শাস্তি দেয়ার যৌক্তিকতা নেই।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন