রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার শুনানিতে মিয়ানমারের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছে দেশটিতে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত।
দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের অভিযোগ এনে নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
হেগে আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এই মামলার শুনানি হবে। এতে মিয়ানমারের উপদেষ্টা অং সান সু চি'র নেতৃত্বাধীন একটি দল দেশটির পক্ষে লড়বে।
সেই শুনানিতে সু চি ও তার দলের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে একাধিক টুইটার বার্তা ছাড়েন মিয়ানমারে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত রোনেন গিলর।
মিয়ানমারের প্রতি তিনি ‘গুড লাক’ জানিয়ে লিখেন, ‘একটি ভালো রায়ের প্রত্যাশা করছি।’
আরেকটি বার্তায় ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত লিখেন, ‘আইসিজে-তে মিয়ানমার উপদেষ্টা অং সান সু চি লড়তে যাচ্ছেন, শুভকামনা।’
পরবর্তীতে এসব টুইটার বার্তা রোনেন গিলর মুছে ফেললেও সেগুলোর স্ক্রিনশট প্রকাশ করে ইসরায়েলের সংবাদপত্র হারেৎজ।
তবে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আইসিসির শুনানিকে সামনে রেখে রাষ্ট্রদূতের এইসব বার্তা ‘ভুল’ ছিল এবং সেটি তাৎক্ষণিক সংশোধন করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইসরায়েল রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের প্রতি সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে নিন্দা জানায়। এক সপ্তাহ আগেও এই নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইসরায়েল।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার ঘটনায় পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গণহত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ।
এই ঘটনায় বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে মামলাটি দায়ের করে গাম্বিয়া।
প্রসঙ্গত, গাম্বিয়া ও মিয়ানমার দুই দেশই ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ। এই কনভেনশন শুধু দেশগুলোতে গণহত্যা থেকে বিরত থাকা নয়; বরং এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ এবং অপরাধের জন্য বিচার করতে বাধ্য করে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন