পরকীয়া। তাও বড় ভাবির সঙ্গে। স্বামী মোহিতের এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি চার সন্তানের মা প্রতিমা বানাওয়াল। তাই তিনি মোহিত বানাওয়ালকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। এখানেই সব শেষ নয়। মৃত স্বামীর দেহ তিনি রান্নাঘরের ভিতর মাটির নিচে পুঁতে রাখেন। এর ওপর মাটি দিয়ে নির্মাণ করেন একটি চুলা। ওই চুলায় ১০ দিন ধরে তিনি রান্নাবান্না করেন।
কিন্তু মোহিত বানাওয়ালকে কয়েকদিন ধরে দেখতে না পেয়ে তার বিষয়ে জানতে চান প্রতিবেশীরা। আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসে সব কাহিনী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ঘটনাটি ভুপালের অনুপপুর জেলার কারোদাটোলা গ্রামের। ঘটনা যায় পুলিশে। পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতিমাকে। তিনি তাদের কাছে জানান, তার ভাসুরের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল তার স্বামী মোহিতের। তাই তিনি তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করেন তার ভাসুর। উল্লেখ্য, মোহিত বানাওয়াল রাজেন্দ্রগ্রাম কোর্টের একজন আইনজীবী। বসবাস করতেন ছত্তিশগড় সীমান্তের কাছে অনুপপুর জেলার কারোদাটোলা গ্রামে। গত ১১ই নভেম্বর থেকে মোহিত নিখোঁজ। মোহিত ও তার বড়ভাই ঘনরাম বানাওয়ালের পরিবার একই বাড়িতে বসবাস করতেন।
অনুপপুরের এসপি কিরানলতা কেরকেট্টা বলেছেন, অভিযুক্ত প্রতিমা স্বীকার করেছেন যে, তার ভাসুরের স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল মোহিতের। এ বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। জানতে পারেন ঘণরাম বানাওয়ালও। তাই তারা দু’জনে মিলে হত্যা করেছেন মোহিতকে। প্রতিমা বলেছেন, প্রথমেই তিনি মোহিতের খাবারে মাদক ড্রাগ বা নেশাদ্রব্য মিশিয়ে দেন। ওই খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন মোহিত। এ অবস্থায় বৈদ্যুতিক তার দিয়ে তার শ্বাসরোধ করেন প্রতিমা ও তার ভাসুর ঘনরাম। মোহিত মারা যাওয়ার পর তার হাত ও পা বেঁধে তারা রান্নাঘরে মাটির নিচে পুঁতে রাখেন। তারপর তার ওপর চুলা তৈরি করে তাতে রান্না করতে থাকেন। ২১ শে নভেম্বর পর্যন্ত ওই চুলায় রান্না করতে থাকেন প্রতিমা। কিন্তু রান্নাঘরের বিভিন্ন স্থানে নানা রকম চিহ্ন দেখে মৃতদেহের অবস্থান নির্ণয় করে স্থানীয় গ্রামবাসী এবং পরে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাতে দেখা যায়, মোহিতের মাথা যেখানে ঠিক তার ওপরে বানানো হয়েছিল চুলা।
ঘটনা প্রকাশ পায় গ্রামবাসীর জিজ্ঞাসাবাদে। এসপি কিরণলতা বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে মোহিত নিখোঁজ। তাই বানাওয়ালের বাড়িতে বৃহস্পতিবার একটি মিটিং আহ্বান করে গ্রামের কিছু মানুষ। ওই মিটিং চলাকালে নিজের রান্নাঘরে কাউকে যেতে দিতে মোটেও রাজি ছিলেন না প্রতিমা। এতে গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়। কেউ কেউ জোর করে তার রান্নাঘরে প্রবেশ করেন। তারা দেখতে পান মাটির যে চুলাটি বানানো হয়েছে তা নতুন। কেউ কেউ চুলার মাটি বরাবর রড ঢুকিয়ে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে পচা উৎসট গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাসী পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এসপি কিরণলতা বলেছেন, ময়না তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে মোহিতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। চুলা ও গর্ত খুঁড়তে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে পুলিশ তা জব্দ করেছে। এরপর পুলিশের কাছে সব কিছু স্বীকার করেছেন প্রতিমা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন