আসাম ইস্যুকে অভ্যন্তরীণ বললেন জয়শঙ্কর
আসাম রাজ্যের প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে ‘নাগরিকহীন’ করার ইস্যুকে ‘অভ্যন্তরীণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ব্রিফিংয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়- আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) মাধ্যমে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। এটি বাংলাদেশকে প্রভাবিত করবে কিনা?
জবাবে তিনি বলেন, ‘আসাম রাজ্যে এনআরসি নিয়ে যা হচ্ছে, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
তার পাশে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন এই ইস্যুতে কোনো মন্তব্য করেননি।
গতবছরের জুলাইয়ে এনআরসি প্রকাশের পর এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রভাবশালীরা নেতারা স্পষ্টই বলেছেন, আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিরা অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি। এসব অবৈধ ব্যক্তিদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।
তিন দিনের সফরে গতকাল সোমবার রাতে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পূর্বনির্ধারিত সূচি হিসেবেই তিনি সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। আজই বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও তার সাক্ষাতের কর্মসূচি রয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জয়শঙ্কর রোহিঙ্গা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, কানেকটিভিটি, সীমান্তে নিরাপত্তা, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে কীভাবে ভারত অংশীদার হবে, তা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন বাংলাদেশ, ভারত এবং মিয়ানমার- তিন দেশের স্বার্থেই দরকার বলে তার দেশ মনে করে। এই ইস্যুতে আমরা বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
পানিবণ্টনের ফর্মুলায় সম্মত
এক প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের ক্ষেত্রে দু’পক্ষই লাভবান হয়, এমন একটি ফর্মুলা বের করার বিষয়ে দু’দেশ সম্মত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দু’দেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে আমরা প্রস্তুত। তিস্তার বিষয়ে আমাদের একটি অবস্থান আছে। এ বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আরেক প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ নিয়ে আলোচনা করেছি এবং নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতা বাড়লে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে দমনে সহযোগিতা বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দু’দেশের সম্পর্ক কৌশলগত সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে কানেকটিভিটির সম্ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করতে চাই। এর বাইরেও অনেকগুলো সরকারি ও বেসরকারি খাত নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা আরও আলোচনা করব।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন