ন্যানোপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ড. ফাতিমা আল-যাহরা আল-আতরাকসি শরীরের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে নতুন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। এটার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার মধ্যকার পারস্পারিক যোগাযোগের ভাষা অনুধাবন করে তাদের ধ্বংস করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
লেবাননি-ইরাকি বংশদ্ভুত কুয়েতি এই বিজ্ঞানী বলেন,
“আমার পরীক্ষায় ব্যবহৃত নতুন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া সনাক্ত করা এবং তার চিকিৎসা করা সম্ভব। আমি আশা করি এটি চিকিৎসকদের সরাসরি নির্দিষ্ট ঔষধ প্রদানে সাহায্য করবে।”
দুই সন্তানের জননী ড. আল-আতরাকসি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পদার্থবিজ্ঞান ও ন্যানোপ্রযুক্তির উপর ডেনমার্কের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেনমার্ক থেকে পিএইচডি অর্জন করেছেন।
ড. ফাতিমা আল-যাহরা আল-আতরাকসি মূলত এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন যা শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্যাকটেরিয়াসমূহের চলাচল সনাক্ত এবং তাদের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগের অর্থ অনুধাবন করে তার যথার্থ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
যন্ত্রটির মাধ্যমে মানব শরীরে ব্যাকটেরিয়া জনিত যেকোন আক্রমণ থেকে আগাম সংবাদের ভিত্তিতে পূর্বেই সতর্ক হয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে মানুষ সুস্থ থাকতে পারে।
যন্ত্রটি তিনি এখনো উন্নত করার চেষ্টা করছেন, যা পরবর্তীতে চিকিৎসা জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ সাধারণ মানুষ তাদের নিজস্ব স্মার্টফোনের সাহায্যে ব্যবহার করতে পারে।
বর্তমানে প্রচলিত ডায়গোনেস্টিক টেস্টের তুলনায় ড. আল-আতরাকসির পরীক্ষা দ্বিগুন কার্যকর। কেননা, প্রচলিত পরীক্ষাগুলোতে তার মত ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ সংকেত বোঝার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন,
“পুরাতন পদ্ধতিগুলো সম্পদের এক বিশাল অপচয়। আমার ধারণা হল আমরা যদি নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে জানতে পারি, তবে আমাদের চিকিৎসাকেও আমরা সুনির্দিষ্ট করতে পারবো এবং প্রতি রোগীর বিপরীতে আমাদের এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমে আসবে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এন্টিবায়োটিকের অধিক ব্যবহারের ফলে মানবশরীরের শরীরের রোগজীবাণু এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিস্বরূপ হয়ে উঠছে।
এই সংক্রান্ত আরো গবেষণার জন্য তিনি ‘প্রিডাইয়োগনস’ (PreDiagnose) নিজস্ব একটি গবেষণা সংস্থা তৈরি করেছেন এবং এই সংস্থার অধীনে গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন