অ্যাপোলো অভিযানের ৫০ বছর পর মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আবারও চাঁদে পা রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে। মঙ্গলে অভিযানের পাশাপাশি ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে আগামী প্রজন্মের মহাকাশযানের মাধ্যমে যাওয়ার পরিকল্পনা এরই মধ্যে এগিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
নাসার নতুন এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে গ্রিক মিথলজির অ্যাপোলোর জমজ বোন আর্তেমিসের নামে। নাসা বলছে, এই মিশন থেকে চাঁদের বুকে প্রথমবারের মতো কোনো নারীকে পাঠানো হবে। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে, কে হতে যাচ্ছে সেই নারী? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য কেউ জানে না। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, নাসার ১২ জন নারী মহাকাশচারীর মধ্য থেকেই একজন হতে যাচ্ছেন সেই সৌভাগ্যবান। ওই ১২ জন নারীর বয়স ৪০ থেকে ৫৩ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সেনা পাইলট, ডাক্তার এবং বিজ্ঞানী, যাদের কয়েক হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে বাছাই করা হয়েছে। তবে নতুন কোনো নারী মহাকাশচারীকে চাঁদে যাওয়ার জন্য নেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি বেশ কয়েকজন মহাকাশচারী ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে। তারা প্রত্যেকেই জানান, নতুন কাউকে নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
সাবেক মহাকাশচারী ইলিয়েন কলিন্স বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি নতুন যে কাউকে নিয়ে চাঁদে যেতে রাজি। কিন্তু আপনার যদি পর্যাপ্তসংখ্যক অভিজ্ঞ মহাকাশচারী থাকে যারা জানে কীভাবে মহাকাশে কাজ করতে হয় সে ক্ষেত্রে তাদের নিয়ে যাওয়াই উত্তম। মহাকাশে যাওয়ার পর কার কেমন প্রতিক্রিয়া হবে তা পৃথিবীতে বসে বলা সম্ভব নয়।’
নাসার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কেন বোয়ারসক্স বলেন, ‘আমার মনে হয় যাদের অন্তত একবার মহাকাশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে তাদের পাঠানোই ভালো হবে।’ ১৯৫৮ সালে নাসা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর শুধু সেনাবাহিনী থেকেই প্রার্থী নেওয়া হতো, যাদের সবাই পুরুষ। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত চাঁদের বুকে হাঁটা মহাকাশচারীদের ১২ জনই পুরুষ। ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো চারজন নারী মহাকাশচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অ্যানি ম্যাকক্লেইন একজন সাবেক সেনা পাইলট। চলতি মাসের শেষের দিকে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে (আইএসএস) যাবেন তিনি। এ ছাড়া বর্তমানে আইএসএসে সাবেক প্রকৌশলী ক্রিস্টিনা কচ অবস্থান করছেন। টানা ১১ মাস মহাকাশে থেকে তিনি নারী হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন। নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই দুই নারীর মধ্যেই একজন হতে যাচ্ছেন চাঁদের বুকে হাঁটতে পারা সৌভাগ্যবান সেই নারী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন