লোকসভা নির্বাচনের এগজিট পোল প্রকাশের পরদিন কলকাতায় অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু ও পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। নির্বাচন শেষ হওয়ার আগে থেকেই তিনি বিজেপিকে থামাতে সচেষ্ট হয়েছেন। এগজিট পোলের হিসেব অনুযায়ী নির্বাচনে অনায়াস জয় পেতে চলেছে বিজেপি। তার পরের দিনই মমতার সঙ্গে বৈঠক করলেন চন্দ্রবাবু।
কলকাতায় এসেই জানিয়ে দিলেন , “আমরা রাজনীতি নিয়ে কথা বলব।” তিনি এও বলেন, “আমরা ওকে নয়াদিল্লিতে আসতে বলেছি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করার জন্য।” চন্দ্রবাবু বলেন, আগামী বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে বিরোধী দলগুলি ইভিএম সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করবে।
নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই এগজিট পোল জানিয়ে দেয় বিজেপিই আবার মসনদে বসছে। ব্যবধানও হবে বিরাট। অনায়াসেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে তারা। এগজিট পোলের হিসেব থেকে পরিষ্কার, অন্ধপ্রদেশে চন্দ্রবাবুর প্রতিপক্ষ জগন্মোহন রেড্ডির দল ২৫টির মধ্যে ১৫টি আসনই পাবে। চন্দ্রবাবুর দল পাবে মাত্র ১০টি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রবাবু, দুজনেই এগজিট পোলের হিসেবকে এক কথায় নাকচ করে দিয়েছেন। মমতা জানিয়েছেন এটা ‘গসিপ’। তিনি বলেন, “গেমপ্ল্যানটা হল হাজার হাজার ইভিএমকে গসিপের মাধ্যমে কারচুপি অথবা পরিবর্তন করা।”
সোমবার চন্দ্রবাবু বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত এ বিষয়ে আরও স্বচ্ছ ও দায়িত্ববান হওয়া। পাশাপাশি কেন ভিভিপ্যাটের ৫০ শতাংশের গণনা করা হবে না সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, “এবার আমরা জানতে চাই, যদি কোনো গরমিল থেকেই থাকে। তাহলে সমস্ত বিধানসভা ধরে গণনা করতে হবে। কেন দেরি করছেন? কেন এড়িয়ে যাচ্ছেন?” পাশাপাশি প্রতিটি ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট সংযুক্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “সারা পৃথিবীর মানুষ কথা বলছেন এভিএম কারচুপি নিয়ে।”
চন্দ্রবাবু বলেন, “আমরা চাই যেখানে ইভিএম থাকবে, সেখানেই ভিভিপ্যাট থাকবে... যখনই আপনি ইভিএম টিপবেন তখনই প্রিন্টার একটি ব্যালটের প্রিন্ট আউট বের করবে, যেখানে নাম ও দলীয় চিহ্নটি থাকবে। এবার ভোটার সেটি দেখে পরীক্ষা করে ব্যালট বক্সে ফেলতে পারবেন।”
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই ইভিএম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিজেপি বিপুল জয় পায়। বিরোধী দলের দাবি ছিল, ইভিএমে এমন কারচুপি করা হয়েছিল যাতে সব ভোটই বিজেপি পায়। নির্বাচন কমিশন অবশ্য এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছে, মেশিনকে ওইভাবে অবৈধ হস্তক্ষেপ করা বা হ্যাক করা যায় না।
সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি তার ব্লগে লেখেন, “এগজিট পোল তৈরি হয় ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার থেকে। ইভিএমের কোনো ভূমিকাই এতে নেই। যদি ২০১৯-এর ২৩ মে এগজিট পোলের হিসেব ও নির্বাচনের ফল একই দিকে ধাবিত হতে দেখা যায়, তখন বিরোধীদের ইভিএম নিয়ে মিথ্যে অভিযোগ ভিত্তিহীন হয়ে যাবে।”
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন