শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় ৩৫৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গোয়েন্দা তৎপরতায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দো।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়েছে।
পদত্যাগের পর ফার্নান্দো গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি নিজের কর্মের ব্যর্থতার জন্য পদত্যাগ করছি না। তবে প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে পরিচালিত কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধে নিয়েই সরে যাচ্ছি।’
এর আগে এ হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব নিয়ে বিতর্ক ও প্রশ্নের মুখে দেশটির পুলিশ প্রধান (আইজিপি) পুজিথ জয়াসুন্দর ও প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দোকে গতকাল বুধবার পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।
গেল মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে শ্রীলঙ্কার পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নেতৃত্বে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘হামলার বিষয়ে সতর্কবার্তা পাওয়ার পর নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সেটি আমাকে অবগত করেনি। আমরা আর নমনীয় থাকবো না, এবার কঠোর পদক্ষেপ নেবো।’
এরইমধ্যে গত মঙ্গলবার ভয়াবহ ওই সিরিজ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামলাকারীদের নাম ও ছবি প্রকাশ করেছে আইএসের মুখপত্র ‘আমাক’।
ওইদিন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে এক অধিবেশনে দেয়া ভাষণে দেশটির প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজেবর্ধনে দাবি করেছেন, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতেই শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের অনুষ্ঠানে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়েছে।
এর একদিন পরই বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেবর্ধনে জানান, ওই হামলায় ৯ জন আত্মঘাতী অংশ নিয়েছিলো। যেখানে এক নারীও ছিল। হামলাকারীদের মধ্যে ৮ মুখোশধারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (২১ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৯টার দিকে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও দুটি স্থাপনায় সংঘবদ্ধ সিরিজ বোমা হামলায় অন্তত ৩৫৯ জনের প্রাণহানি হয়। আহত হন আরও অন্তত ৫ শতাধিক লোক। নিহতদের মধ্যে দুই বাংলাদেশিসহ অন্তত ৩৮ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন ৬০ জনকে আটক করেছে শ্রীলঙ্কার পুলিশ।
এদিকে দেশটির সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় সব ক্যাথলিক গির্জা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নৃশংসতম এ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমন ঘোষণা দেন দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ ধর্মযাজক।
ব্রেকিংনিউজ/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন