গুজরাট দাঙ্গায় গণধর্ষণের শিকার বিলকিস বানুকে ৫০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিল ভারতের সুপ্রিমকোর্ট।
আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তার ওই হাতে টাকা তুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাকে সরকারি চাকরি এবং বাসস্থানের ব্যবস্থাও করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে গুজরাট সরকারকে। মঙ্গলবার এক রায়ে এ আদেশ দেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
প্রাথমিকভাবে গুজরাট সরকার বিলকিসকে মাত্র ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়েছিল। গুজরাটের দাহদের বাসিন্দা বিলকিস বানো। গোধরা কাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে, ২০০২ সালের ৩ মার্চ গ্রাম ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিল তার পরিবার। কিন্তু আমদাবাদের কাছে রন্ধিপুর গ্রামে দাঙ্গাবাজদের হাতে পড়ে যান তারা। সেখানে গণধর্ষণ করা হয় বিলকিস বানোকে। তার পরিবারের ১৪ জন সদস্যকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়।
রেহাই পায়নি তার তিন বছর দুই মাস বয়সী মেয়ে সালেহাও। পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় তাকে। ২০১৭ সালে এক রায়ে গুজরাট হাইকোর্ট ৭ জনকে এ ঘটনায় জড়িত বলে দায়ী করেন। এদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং দুই জন চিকিৎসক। এর মধ্যে রয়েছেন আইপিএস অফিসার আরএস ভাগোড়া। হাইকোর্ট জানান, তার বিরুদ্ধে দাঙ্গায় অংশ নিয়ে খুন এবং ধর্ষণের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
এ বছর জুন মাসে অবসর নেয়ার কথা পঞ্চম অভিযুক্ত, আইপিএস অফিসার আরএস ভাগোরার। অথচ এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি তাদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে গুজরাট সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন আদালত।
আদালত আরও বলে, ‘২১ বছরের বিলকিসকে শুধু ২২ বার ধর্ষণই করা হয়নি, নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল তার তিন বছর দুই মাসের মেয়েকেও। তার পর থেকেই যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বিলকিস।
এখন তার ৪০ বছর বয়স। তার পরিবারের আর কেউ বেঁচে নেই। পড়াশোনাও তেমন জানেন না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দয়ায় বেঁচে রয়েছেন।’
২০০২ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। এই দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার জন মারা যান। যাদের অধিকাংশ মুসলিম। ধর্ষণের শিকার হন বিপুলসংখ্যক মুসলিম নারী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন