আহমেদ আল-হামাদি। বয়স মাত্র ১৩ বছর। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি গোরস্থানে হেঁটে বেড়ায়। খালি পায়ে। এই বয়সে তার স্কুলে থাকার কথা। কিন্তু বই-খাতা ছেড়ে শুধু পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে এখানেই কাজ করে সে।
একটার পর একটা সাজানো কবরগুলো জিয়ারত করতে প্রতিদিনই আসে শোকার্ত স্বজনরা। সে তাদের কাছে পানি বিক্রি করে। কবরগুলো ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেয়।
বিনিময়ে পায় কিছু টাকা। সেই টাকায় চলে তাদের সংসার। মঙ্গলবার এএফপির প্রতিবেদনে ইয়েমেনি শিশুদের এ করুণ চিত্র উঠে এসেছে। ইয়েমেনে হামাদির মতো অনেক শিশুই এখন আর স্কুলে যায় না। গোরস্থানে কাজ করে। দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারগুলোর শিশুরা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ করছে।
ছোট কাঁধে পানির ভার বহন করে আহমেদ চারাগাছে পানি দেয়। আহমেদ বলে, ‘আমরা সাধারণত দাফনের জন্য অপেক্ষা করি।’ শিশুটি আরও বলে, যদি কেউ মারা না যায় তবে আমরা গোরস্থানে ঘুরাঘুরি ও খেলাধুলা করি।’ যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও মহামারি আরব বিশ্বের দরিদ্রতম দেশটিতে চরম বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আরব বিশ্বের মধ্যে ইয়েমেনে শিশু শ্রম সবচেয়ে বেশি। শিশুদের জন্য দেশটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
মেয়ে শিশুদের বাধ্য হয়ে বাল্য বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং ছেলে শিশুদের যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ইয়েমেনকে ‘শিশুদের জন্য দোজখ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন