অযোধ্যার বাবরী মসজিদ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড।
রোববার উত্তরপ্রদেশের নদওয়াতুল ওলামায় এ বৈঠকে মিলিত হন ভারতের শীর্ষ মুসলিম নেতৃবৃন্দ।
বাবরী মসজিদের বিরোধ নিরসনে সুপ্রিমকোর্টের মধ্যস্থতাকারী প্যানেল নিয়োগ দেয়ার পর অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এটিই প্রথম বৈঠক। এ বৈঠক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
ভারতীয় মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড। মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর ব্যাপারে সবমতের নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে বোর্ডটি।
বোর্ডের প্রধান মাওলানা সাইয়্যিদ রাবে হাসানী নদভীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুফতি খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানি, সাইয়্যেদ ওয়ালী রাহমানি,জামাতে ইসলামী হিন্দের আমির সাইয়্যেদ জালালুদ্দিন উমরী, মাওলানা খালেদ রশিদ ফিরিঙ্গী মহল্লী, অ্যাডভোকেট জাফর ওয়াব গিলানি, মুফতী আতিক আহমদ বাস্তবী, মাওলানা উমরাইন রহমানি প্রমুখ।
বাবরী মসজিদ মামলার নিষ্পত্তির জন্য গত ৮ মার্চ সুপ্রিমকোর্টের সাবেক বিচারপতি ইব্রাহীম খলিফুল্লাহর নেতৃত্বে ধর্মগুরু রবিশঙ্কর ও আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চুকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে সুপ্রিমকোর্ট। আইনি সহায়তার জন্য প্রয়োজন হলে এই তিন ব্যক্তি আরও লোককে তাদের প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন বলেও জানিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে হিন্দুরা ওই বিতর্কিত জায়গায় একত্রিত হয়ে মোগল সম্রাট বাবরের নামের ষোড়শ শতকের মসজিদটি ধ্বংস করে দেন। এ নিয়ে পরবর্তী দাঙ্গায় দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া এই মসজিদ নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিতর্কে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। মুসলমানরা সেখানে নতুন একটি মসজিদ গড়তে চান। হিন্দুদের দাবি, সেখানে তাদের দেবতা রামের জন্ম হয়েছিল। কাজেই তারা সেখানে রামমন্দির নির্মাণ করতে চান।
১৫২৬ সালে মোগল সম্রাট বাবর মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। ১৮৮৫ সালে মসজিদ প্রাঙ্গণে হিন্দু ধর্মীয় সংস্থাগুলো দেবতা রামের সম্মানে একটি মন্দির নির্মাণের অনুমিত চাইলে তা প্রত্যাখ্যাত হয়।
১৯৪৯ সালে একদল হিন্দু মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে রামের একটি মূর্তি স্থাপন করেন। কিন্তু সেটি না সরিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এ ছাড়া একজন হিন্দু ধর্মীয় গুরুকে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়।
১৯৮৬ সালে ফয়জাবাদ জেলা প্রশাসন মসজিদ প্রাঙ্গণ হিন্দুদের ধর্মীয় আচার পালনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। এর পর ১৯৯২ সাল পর্যন্ত পরিস্থিতি বেশ শান্তই ছিল। কিন্তু ওই বছর বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপিসহ বিভিন্ন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মসজিদটি ধ্বংস করে দেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন