শনিবার ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন নিউজিল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন।
শুক্রবার ভয়াবহ এক হামলার শিকার হয় শান্ত, সুন্দর দেশটি। শুক্রবারের দুপুর রক্তাক্ত আর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় সন্ত্রাসী হামলায়। ৪৯ জন মানুষের মৃত্যু স্তব্ধ করে দেয় গোটা বিশ্বকে।
সেই হামলায় নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে কাতর হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। ঘটনার পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ওই হামলাকে 'সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবেই অভিহিত করেন। মুসলিম বিশ্বে যা প্রশংসিত হয়েছে। এরপর শনিবার দেশটির অস্ত্র আইন পরিবর্তনেরও ঘোষণা দেন তিনি।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার কথা বলার সময় কোনো রকমে কান্না আটকে রাখছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে শুক্রবার দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিন বাংলাদেশিসহ কমপক্ষে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৪৮ জন।
জানা গেছে, জুমার নামাজের সময় দুজন বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চের ডিনস অ্যাভিনিউর আল নুর মসজিদ ও পার্শ্ববর্তী লিনউডের মসজিদে হামলা চালায়। স্ট্রিকল্যান্ড স্ট্রিটে একটি গাড়িবোমা হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
নিউজিল্যান্ড সরকার একে সন্ত্রাসী হামলা বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
অন্যদেশের সন্ত্রাসী ঘটনায় হামলাকারীদের নিহত হতে দেখা গেলেও নিউজিল্যান্ডে তা হয়নি। সেখানে হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। এ বিষয়টিও প্রশংসা কুড়িয়েছে।
হামলার পরদিন জাসিন্ডা আরডার্ন শনিবার সকালে ওয়েলিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন ‘হামলাকারীর কাছে পাঁচটি বন্দুক ও একটি লাইসেন্স ছিল। আমাকে জানানো হয়েছে যে লাইসেন্সটি ২০১৭ সালের নভেম্বরে দেওয়া হয়েছিল। তার কাছে পাওয়া অস্ত্রগুগুলোর মধ্যে দুটি সেমি-অটোমেটিক, দুটি শটগান ও লিভার অ্যাকশন ফায়ারআর্ম।’
‘যেহেতু এ ধরনের ঘটনা একের পর ঘটেই যাচ্ছে আর এগুলো ঘটছে লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়েই, তাই আমি ঠিক এই মুহূর্তে আপনাদের বলতে পারি...আমাদের অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আসবে।’
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটলেও দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ত্র আইনের পক্ষে অবস্থান নেন।
এ ছাড়া শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। পরম মমতায় তাকে জড়িয়ে ধরতে দেখা যায় কইতগ্রস্ত নারীদের।
শনিবার নিহতদের প্রতি সমবেধনা জানাতে বা তাদের প্রতি সন্মান দেখাতে মাথায় কাপড় জড়ান তিনি।
শুক্রবার হামলার পর আন্তজর্তাতিক গণমাধ্যমে যখন নির্মম এ হত্যাযজ্ঞকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে অভিহিত করছিল না। তখন সর্বপ্রথম তিনি এই নিষ্ঠুর ঘটনাকে 'সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি ভাষণে আরো বলেন, 'নিহত ব্যাক্তির মধ্যে প্রায় সবাই ছিলেন অভিবাসী। যারা একটু শান্তির জন্য, নিরাপত্তার জন্য এখানে বসবাস করতে এসেছিলেন! যারা নিহত হয়েছেন, অভিবাসী, শরণার্থীসহ হামলার শিকার হওয়া সবাই নিউজিল্যান্ডের অংশ।'
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন