গত বৃহস্পতিবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী হামলায় দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর ৪৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এর পর থেকেই পার্শ্ববর্তী পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে দেশটির বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে ভারত। যদিও ভারতের অভিযোগকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান।
কিন্তু ভারতের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি.এস. হুদা বলছেন, ‘সীমান্ত পার করে এতগুলো বিস্কোরক অনুপ্রবেশ করানো সম্ভব নয়।’
ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের ওই হামলায় অংশ নেওয়া আদিল আহমাদ দার ৭৫০ পাউন্ড ওজনের বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে।
মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে শনিবার তিনি বলেন, ‘জম্মু হাইওয়েতে হামলা চালাতে গোপন কোনো স্থান থেকেই ওই বিস্ফোরক আনা হয়ে থাকতে পারে।’
এর আগে ২০১৬ সালে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে যখন হামলা হয় তখন ভারতীয় সেনাবাহিনীর উত্তর কমান্ডের দায়িত্ব পালন করেন জেনারেল হুদা।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে চালানো ওই ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। যে সংগঠনটি পাকিস্তানে নিষিদ্ধ।
হামলার পর পরই ভারত পাকিস্তানকে কূটনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণভাবে একঘরে করার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার কারণে সেটা করার খুব কম সুযোগই পাবে ভারত। কারণ ইতোমধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের পক্ষে ভেটো ক্ষমতা কাজে লাগিয়েছে বেইজিং।
অন্যদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যম বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনীকে ছাড়পত্র দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
কিন্তু মার্কিন প্রভাবশালী ওই গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগও ভারতের জন্য সীমিত। কারণ পাক-ভারতের ওই সীমান্ত তুষারের চাদরে আবৃত এবং পাকিস্তানি সেনারাও উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
ওয়াশিংটনে কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ ছাড়া পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে আমেরিকার সমর্থনও ওইভাবে পাবে না ভারত। কারণ এই মুহূর্তে আফগান তালেবানদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে ইসলামাবাদ। আগামীকাল সোমবার ইসলামাবাদে তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধির সরাসরি আলোচনা হওয়ার কথাও রয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, হামলাকারী আদিল এ ধরনের ঘটনার জন্য স্থানীয়ভাবেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
আদিলের বন্ধ-বান্ধবদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ফোর্সের সদস্যদের নির্যাতন থেকেই এই পন্থা অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
কাশ্মিরে ভারতের প্রায় আড়াই লাখ সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য রয়েছে। ফলে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সামরিকায়ন এলাকায় পরিণত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ কাশ্মীরি রিজার্ভ ফোর্সের সদস্যদের ভালোভাবে দেখেন না। কারণ তাদের কারণেই ব্যাহত হচ্ছে কাশ্মীরিদের দৈনন্দিন জীবনযাপন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন