সাংবাদিক জামাল খাশোগির মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করছে তুরস্ক পুলিশ। হত্যার পর তাকে টুকরো করে দূতাবাসের ভেতরেই এক কাবারের তন্দুরির মধ্যে ছুড়ে ফেলা হয়।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম হুরিয়াত জানায়, বৃহস্পতিবার নতুন এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইস্তাম্বুল নিরাপত্তা অধিদপ্তর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হত্যার পর মৃতদেহ লুকাতে ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসের ভেতরেই কাবাবের তন্দুরির আগুনে তা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমে তুর্কি গোয়েন্দাদের একের পর এক ‘তথ্য ফাঁসে’র মুখে ১৯ অক্টোবর খাশোগি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
তুরস্ক এ ঘটনার জন্য সৌদি যুবরাজকে দায়ী করলেও তা অস্বীকার করে রিয়াদ।
জানা যায়, দূতাবাসের অভ্যন্তরে আগুনের তিনটি তন্দুরি আছে। মাটি দিয়ে এসব চুলা বানানো হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি ব্যবহার হয় পানি সংরক্ষণ কাজে। আরেকটি দিয়ে কাবাব বানানো হতো।
তুরস্কের প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, এ ঘটনায় ২২ জনের একটি হিট স্কোয়াড অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ১৫ জনই দুটি বিমানে করে রিয়াদ থেকে ইস্তাম্বুলে আসে।
এ হিট স্কোয়াডে ছিলেন সৌদি আরবের সায়েন্টিফিক এবং ফরেনসিক কাউন্সিলের প্রধান সালাহ মুহাম্মদ আল-তুবাইগিও। হাড়গোড়সহ লাশ পুড়ানো সেই সঙ্গে ডিএনএ ধ্বংস ফেলার পুরো কার্যক্রমটি তার তত্বাবধানে হয় বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে বারবার আগুনের তন্দুরিটি পরিদর্শনের জন্য আবেদন জানালেও তুরস্কের তদন্তকারীদের অনুমতি দেয়নি সৌদি দূতাবাস। ফলে এখনো বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করা যাচ্ছে না।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেদিন ইস্তাম্বুলের একটি বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট থেকে মাংস কেনে সৌদি দূতাবাস। যার অর্ধেকই ছিল কাচা।
ধারনা করা হচ্ছে, তন্দুরে পোড়ানোর জন্যই এ কাচা মাংস নেওয়া হয়। খাশোগি হত্যার পর মাংসের খাবাব খেয়েছিলেন হিট স্কোয়াডের সদস্যরা? নাকি পুরো ঘটনাটি শুরু থেকে পরিকল্পতি ছিল? এমন প্রশ্ন নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা এগুতে শুরু করেন।
এসব প্রশ্ন ও তথ্যকে সামনে রেখে তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার ধারনা খাশোগির দেহ টুকরো টুকরো করার পর পুড়িয়ে ফেলা হয়।
সংবাদমাধ্যম হুরিয়াতের খবর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন