৫, ৬, ৩, ৮, ৩, ২, ৪, ০, ৩*, ৫, ১। এগুলো কি? নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ১১ ব্যাটারের খেলা ইনিংস! মোবাইল ডিজিটের মতো দেখতে এই স্কোরগুলোই স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছে সব! নিজেদের প্রথম ম্যাচে সালমাদের শোচনীয় পরাজয়ের কথা আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না।
সালমারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ গেছে প্রথম বারের মতো নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে। কিন্তু শুরুতেই বড় এক ধাক্কা খেল বাংলাদেশের মেয়েদের সেই স্বপ্ন। আজ ভোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে শোচনীয় হার। সালমা খাতুনের বাংলাদেশ হেরেছে ৬০ রানে!
পরাজয়ের এই ব্যবধানটা ঠিক বাংলাদেশের অসহায় আত্মসমর্পনের চিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে পারছে না! আসল চিত্রটা অঙ্কিত উপরের ওই স্কোরগুলোতেই। উপরে উল্লেখিত বাংলাদেশের ১১ ব্যাটারের ইনিংসগুলো যোগ করলে হয় ৪০ ! সঙ্গে আরও একটি ৬-এর হিসাব আছে। সেই ৬-এর ইনিংসটি এসেছে মিস্টার এক্সট্রার কাছ থেকে। সব মিলে ৪৬ রানে অলআউট হয়ে বাংয়লাদেশ গড়েছে লজ্জার রেকর্ড। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর।
লজ্জার এই রেকর্ডটা আগেও বাংলাদেশের দখলেই ছিল। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৮ রান করেছিল সালমা খাতুনের দল। সেবার অবশ্য অলআউট হয়নি। ৯ উইকেটে করেছিল ৫৮ রান।
প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেয়েরা ৮ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ১০৬ রান। বলা যায় বাংলাদেশের বোলাররা সাধ্যের মধ্যেই আটকে দিয়েছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতায় সেই সাধ্যের ১০৬ রানও সালমাদের সামনে হয়ে দাঁড়ায় হিমালয়সম! ১০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ মাত্র ৪৬ রানে অলআউট।
হারটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। তবে আরও একটু স্পষ্ট করে বললে, প্রোভিডেন্সে বাংলাদেশ আসলে শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছে একজনের কাছেই। তিনি ডেন্ড্রা ডটিন। হ্যাঁ, ক্যারিবীয় এই পেসার একাই ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। ৩.৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ৬ রানেই ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের ধ্বংসযজ্ঞের শুরুটা অবশ্য ক্যারিবীয় আরেক পেসার শাকেরা সেলমানের হাতে। শুরুতেই শামিমা সুলতানা (৫) ও জাহানারা আলমকে (৩) ফিরিয়ে দেন তিনি। এরপর আয়েশা রহমানকে (৬) ফেরার স্টেফানি টেলর। এরপরের গল্পে শুধুই ডটিনের উইকেট উদযাপনের। একের পর এক উইকেট নিয়ে ১৪.৪ ওভারেই বাংলাদেশ ইনিংসের যবনিকা টেনে দেন তিনি।
ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সালমা খাতুন। ক্যারিবীয়দের ১০৬ রানে বেঁধে রেখে তার সিদ্ধান্তের মর্যাদাও রাখেন বোলাররা। কিন্তু বোলারদের সেই কৃতিত্ব ভেসে গেছে ব্যাটারের ব্যর্থতায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বেশির ভাগ ব্যাটারদের ইনিংসগুলোও মোবাইল ডিজিটের মতোই! ব্যতিক্রম শুধু তিনজন। তারা হলেন অধিনায়ক স্টেফানি টেলর, উইকেটকিপার কাম ব্যাটসম্যান কাসিয়া নাইট ও নাতাশা ম্যাকলিন। এই তিনজনেই শুধু দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন। ব্যাট করা বাকি সবাই আউট হয়েছেন ওয়ান ডিজিটের স্কোর করে।
ব্যতিক্রমী ওই তিনজনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেছেন নাইট। টেলর করেছেন ২৯ রান। ম্যাকলিন ১১। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল পেসার জাহানারা আলম। তিনি ২৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এছাড়া রুমানা ২টি, খাদিজা ও সালমা নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
এ গ্রুপে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ১২ নভেম্বর (বাংলাদেশ সময় ১৩ নভেম্বর ভোরে)। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন