আরেক গণগোলাগুলিতে ঘুম ভাঙল যুক্তরাষ্ট্রের। রক্তে ভাসল রাতের জলসা। বুধবার দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া শহরের একটি মিউজিক বারে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রাজ্য পুলিশের সার্জেন্ট শেরিফ রন হেলাসও রয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। ওই বন্দুকধারীও মারা গেছে। তবে কীভাবে সে নিহত হয়েছে তা জানা যায়নি।
বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রাজ্যের থাউজেন্ড ওকস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার (৪০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে বর্ডারলাইন বার গ্রিলে এ হামলা হয়।
এ সময় বারটিতে শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুশ’ লোক ছিল। তারা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট মিউজিক নাইটে যোগ দিয়েছিল। ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র পাশাপাশি সোয়াত টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
বন্দুকধারী গুলি করা শুরু করলে অনুষ্ঠানে আসা লোকজন বারের দরজা-জানালা ভেঙে বেরিয়ে আসেন। কেউ কেউ টয়লেটের ভেতর আশ্রয় নেন। রাতের এ ঘটনায় ৩০টিরও বেশি গুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভেঞ্চুরা কাউন্টি শেরিফ অফিসের মুখপাত্র এরিক বাসচাও বলেন, ডেপুটি শেরিফ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পরও বারের ভেতরে গুলির শব্দ শুনেছেন। তিনি বলেন, শেরিফের অফিস ফোনে হামলার খবর পেয়ে তার সহকারীরা সেখানে ছুটে যান।
সন্দেহভাজন হামলাকারীকে বারের ভেতর মৃত পাওয়া গেছে। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ঘাতকের গুলি চালানোর উদ্দেশ্যও জানা যায়নি। হামলাকারী স্মোক গ্রেনেড এবং আধা স্বয়ংক্রিয় হাতবন্দুক ব্যবহার করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে কয়েকটি প্রতিবেদনে।
এ ঘটনায় আহত এক প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কেটিএলএ চ্যানেলকে জানান, ‘গুলির মুহুর্মুহু শব্দে আমরা মেঝেতে শুয়ে পড়ি। আমার এক বন্ধু ডিজে ছিল। সে ভয়ে মিউজিক বন্ধ করে দেয়। পরে আরও কিছু গোলাগুলির শব্দ পাই।’
২০ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষার্থী ম্যাট ওয়েস্ট্রন বলেন, ‘এ বারে আমি নিয়মিতই আসি। আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি ও গ্রেনেড ছুড়ে মারার শব্দে ভয়ে আমি ব্যালকনি দিয়ে লাফিয়ে পড়ি।’
ক্যালিফোর্নিয়ার থাউজেন্ড ওয়কস শহরের মেয়র অ্যান্ডি ফক্স সিএনএনকে বলেন, ‘থাউজেন্ড ওয়কস হল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম নিরাপদ শহর। আমরা নিরাপদ শহরের তালিকার শীর্ষে থাকি। কিন্তু বাস্তবতা হল, যে কোনো স্থানে, যে কোনো সময়ে এবং সবচেয়ে সুরক্ষিত সম্প্রদায়েও এমনটা ঘটতে পারে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন