যৌন হেনস্থার অভিযোগের মুখে সাংবাদিক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরের মতোই আত্মরক্ষায় মুখ খুলেছেন লেখক চেতন ভগত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণী ইরা ত্রিবেদী যা যা বলেছেন, সবই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন চেতন। তার দাবির সত্যতা প্রমাণে ২০১৩ সালে ইরার পাঠানো একটি ইমেলের স্ক্রিন শট টুইটারে পোস্ট করেছেন এই লেখক।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, সেই ইমেলের শেষে ইরার লেখায় রয়েছে ‘মিস ইউ, কিস ইউ।’ চেতন সেই পুরনো ইমেল দেখিয়ে ইরার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘তাহলে কে কাকে চুমু খেতে চেয়েছিল?’ ইরাকে ট্যাগ করে চেতনের টুইট, ‘২০১৩ সালের এই ইমেল, বিশেষ করে শেষ লাইনটা বুঝিয়ে দিচ্ছে যে ২০১০ সালের নাম করে ইরা যা বলেছেন, তা মিথ্যা। তিনিও সেটা জানেন। আমার পরিবার এবং আমাকে যে মানসিক হেনস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তা বন্ধ হওয়া দরকার। ভুল অভিযোগ এনে আন্দোলনটার ক্ষতি করবেন না।’
গত ১৩ অক্টোবর ইরা ত্রিবেদী যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন চেতন ভগত এবং সুহেল শেঠের বিরুদ্ধে। এ দিনই আবার ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএফটিডিএ) নোটিস পাঠিয়েছে বলিউড পরিচালক সাজিদ খানকে। কারিশমা উপাধ্যায়, সিমরান সুরি এবং রেচেল হোয়াইট— এই তিন নারী যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছেন সাজিদের বিরুদ্ধে। সে ব্যাপারে সাজিদের কাছে সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছে আইএফটিডিএ।
এর মধ্যে বিনতা নন্দার আনা ধর্ষণের অভিযোগের জবাবে বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা অলোক নাথ সোমবার মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। পূর্বপ্রতিশ্রুতিমতো অলোক স্ত্রীর সঙ্গে করা যৌথ মামলায় লিখিত ক্ষমাপ্রার্থনা এবং এক টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন বিনতার কাছে।
সোমবারই যৌন হেনস্থার অভিযোগের জেরে বলিউডের স্টান্ট ডিরেক্টর শ্যাম কৌশল (অভিনেতা ভিকি কৌশলের বাবা) ক্ষমা চেয়েছেন অভিযোগকারিণীদের কাছে। তার দাবি, তিনি ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে ভাল মানুষ হতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে নমিতা পারেখ নামে এক সহকারী পরিচালক অভিযোগ তোলেন এবং রোববার তা পোস্ট করেন লেখিকা মহিমা কুকরেজা। ফোনে পর্নোগ্রাফিক ভিডিও দেখানোর অভিযোগ উঠেছে শ্যামের বিরুদ্ধে। শ্যাম টুইটারে বলেছেন, ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকি, তার জন্য আমি নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থী।’
ঘটনাচক্রে আজ #মিটু প্রশ্নে মুখ খুলেছেন লতা মঙ্গেশকর। এক সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘কর্মরত নারীদের যথাযথ সম্মান পাওয়া উচিত। যদি কোনও নারীকে তার যোগ্য স্থান দিতে কেউ অস্বীকার করে, তাকে শিক্ষা দেওয়া উচিত।’ লতার দাবি, তার সঙ্গে উল্টোপাল্টা কোনও কাজ করে পার পাওয়ার ক্ষমতা কারও ছিল না। তিনি প্রথম থেকেই সেই জায়গাটা তৈরি করে ফেলেছিলেন।
যৌন হেনস্থার অভিযোগে বিদ্ধ বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেস-ও (আইআইএসসি)। পিএইচডি-র এক ছাত্রী অভিযোগ এনেছেন সিনিয়রের বিরুদ্ধে। আইআইএসসি কাউন্সিল গত মাসে ঘটনাটি জানার পরে বলেছে, ওই ব্যক্তিকে ইস্তফা দিতে বলা হবে। অভিযোগকারিণী জানান, তার সামনে যৌন রঙ মাখানো মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক। আইআইএসসি-র রেজিস্ট্রার ও সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক কোনও মন্তব্য করেননি। অধ্যাপক অনুরাগ কুমার শুধু বলেছেন, এটি সংস্থার অন্দরের ব্যাপার।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন