আরও একবার অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়েছে রুশ কর্মকর্তা ও দেশটির কোম্পানিগুলো। বিষাক্ত রাসায়নিক নার্ভ এজেন্ট দিয়ে ব্রিটেনে সাবেক রুশ গুপ্তচরকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের শাস্তি হিসেবে দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটেনের ‘বিশেষ বন্ধু’ যুক্তরাষ্ট্র। ২২ আগস্টের মধ্যেই এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
বুধবার এ কথা জানিয়ে দেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকও নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে তার দেশকে বাঁচাতে পারল না। বৈঠকের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়।
মস্কোর ওপর আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞার খাড়া ঝুলছে। নতুন করে এই নিষেধাজ্ঞায় তাদের অর্থনীতি এখন খাদের কিনারে। এর মধ্য দিয়ে ‘দুই পুরনো শত্রু’ একটা অর্থনৈতিক যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রুশ অর্থনীতিতে ইতিমধ্যে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বুধবার ওই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর গত দুই দিনে মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুশ মুদ্রা রুবলের দাম ৫ শতাংশ কমে গেছে। এই দর গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে রুশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
মস্কোর শেয়ারবাজারেও ধস নেমেছে। রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও বিমান সংস্থার শেয়ার ৯ শতাংশ কমে গেছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার হারানোর আশঙ্কা করছে এ প্রতিষ্ঠানগুলো।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় প্রথম ধাপে রাশিয়ার সংবেদনশীল ইলেকট্রনিক উপাদান ও এ সংক্রান্ত প্রযুক্তি রফতানি ও প্রতিরক্ষা খাতকে লক্ষ্য বানানো হয়েছে। মার্কিন মুখপাত্র হিদার নওয়ার্ট বলেন, ব্রিটেনের স্যালিসবারির রাস্তায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া রাশিয়াকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে রাশিয়া যদি এ ধরনের কাজ আর করা হবে না- এমন নিশ্চয়তা না দিতে পারে তাহলে আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র : রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে অর্থনৈতিক যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি বলেন, রুশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ডের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো পদক্ষেপ অর্থনৈতিক যুদ্ধ বলে বিবেচিত হবে। এর বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ারও হুশিয়ারি দেন তিনি।
সম্প্রতি মস্কোতে কোমারস্যান্ট পত্রিকাকে এক সাক্ষাৎকারে এই হুশিয়ারি দেন তিনি। ইতিমধ্যে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একে অপরের হাজার হাজার কোটি ডলারের পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করেছে দেশ দুটি। নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগের অভিযোগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছে রুশ প্রেসিডেন্টের দফতর ক্রেমলিন। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেন, নতুন এ নিষেধাজ্ঞা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য’।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন