মল্লিকা শ্রীনিবাসন ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতের চেন্নাইয়ের ট্রাক্টর ও ফার্ম ইকুইপমেন্ট লিমিটেডের (টিএএফই) বর্তমান চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দক্ষ উদ্যোক্তা এবং ভারতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবসায় ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য পরিচিতি লাভ করেছেন। বর্তমানে টিএএফই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ও পরিমাণের দিক থেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রাক্টর প্রস্তুতকারক। পৃথিবীর ৮২টি দেশে এর শাখা রয়েছে।
তিন দশকেরও কম সময়ের মধ্যে মল্লিকা শ্রীনিবাসন আন্তর্জাতিক বাজারে উন্নত মানের ট্রাক্টর প্রস্তুতকারক হিসেবে ও উত্থান-পতনের ট্রাক্টর ব্যবসায়ে টিএএফইকে স্থিতিশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করতে সক্ষম হয়েছেন। মল্লিকা আমেরিকান কৃষি সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক এজিসিওর সঙ্গে টিএএফইর অংশীদারিত্ব জোরদার করেছেন, যাতে উভয় প্রতিষ্ঠানের বৃদ্ধিসাধন ঘটে।
ছোটবেলায় মল্লিকা ব্যবসায় শিক্ষার প্রতি আগ্রহ অনুভব করেন, বিশেষত অর্থনীতির প্রতি তার দুর্বলতা ছিল। সে কারণেই মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করেন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার হোয়ার্টন স্কুল অব বিজনেস থেকে এমবিএ করেন। এরপর ২০১১ সালে যখন তিনি টিএএফইতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন, তখন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এ প্রতিষ্ঠানের নাম আরো উপরে উঠে আসতে শুরু করে। মল্লিকা শ্রীনিবাসনের নেতৃত্বে টিএএফই বছরে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। সেসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের লাভজনক ট্রাক্টর কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। বর্তমানে মল্লিকা শ্রীনিবাসন ভারতের সফল নারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যে অন্যতম।
বিগত বছরগুলোয় নেতৃত্ব দক্ষতা, দূরদর্শিতা ও সফলতার জন্য মল্লিকা শ্রীনিবাসন অনেক প্রশংসা ও পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১ সালে তিনি লন্ডনভিত্তিক পরিষেবা সংস্থা আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং দ্বারা এন্ট্রাপ্রেনিউর অব দ্য ইয়ার-এর খেতাবে ভূষিত হন। পাশাপাশি ফোর্বসের তালিকায় এশিয়ার প্রথম ৫০ জন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নারীর মধ্যে অন্যতম হিসেবেও রয়েছে মল্লিকা শ্রীনিবাসনের নাম। তাছাড়া শিল্প ও বাণিজ্যে অবদান রাখার জন্য ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে। মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত মল্লিকা হোয়ার্টন স্কুলে ডিনের সম্মানসূচক তালিকায় অন্যতম ছিলেন।
তবে নিজ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মল্লিকা শ্রীনিবাসন সমাজের প্রতিও বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। চেন্নাইয়ের ক্যান্সার হাসপাতাল শঙ্করা নেত্রালয়া ও নিজ জন্ম শহর তামিলনাড়ুর তিরুনেভেলিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করে আসছেন।
সূত্র: ব্লুমবার্গ ও টিএএফই
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন