রবিবার দিনটি আর দশটা দিন থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমভাবে শুরু করেছে সৌদি নারীরা। এদিন সকাল থেকে গাড়ির চালকের আসনে পুরুষের পাশাপাশি দেখা গেছে নারীদেরকেও। এতদিন এমন ঘটনা স্বপ্নের মত মনে হলেও আজ থেকে আর তা স্বপ্ন নয় সৌদি নারীদের।
গত বছরের রাজকীয় ডিক্রি অনুযায়ী আজ থেকে গাড়ি চালানোর অনুমতি মিলেছে সৌদি নারীদের। আর রাস্তায় যেসব গাড়ি নারীরা ড্রাইভ করছে তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করছেন দেশটির পুলিশ সদস্যরা। খবর আল আরাবিয়্যার।
শুধুমাত্র চার চাকার গাড়ি নয় মোটরসাইকেল চালাতেও দেখা গেছে সৌদি নারীদের। আর এমন ইতিহাস গড়তে পেরে খুশি দেশটির নারীরাও। তারা বলছেন, আল্লাহর ওপর ভরসা করেই আমরা গাড়ি চালাবো।
একজন নারী জানান, ‘আগে এ জিনিসটি অনেক খারাপ লাগতো যে আমার কোথাও যেতে হলে অন্য কারও জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এছাড়া দোকানে যেতে বা কোথাও যেতে গাড়ি চালানোর জন্য অন্য কারও দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। তবে এখন আমাদের দেশেই আমি গাড়ি চালাতে পারবো। শপিংয়ে বা আমার রান্নার জিনিসপত্র কিনতে আমি নিজেই গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবো।'
রাস্তায় গাড়ি চালানোর বিভিন্ন সেলফি ও ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে উল্লাস প্রকাশ করছেন সৌদি নারীরা। সেখানে তারা নারীদের ক্ষমতায়নের বিভিন্ন বার্তাও তুলে ধরছেন। এছাড়া এসব নারীদের কাছে বেশ প্রশংসিত হচ্ছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
নারীদের গাড়ি চালানো উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দেশটির ট্রাফিক পুলিশ। এছাড়া মোড়ে মোড়ে তারা নারী চালকদের অভিবাদন জানাচ্ছেন।
গত বছর ধর্মীয় কট্টর নীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়ে বেশ কয়েকটি নীতির ঐতিহাসিক পরিবর্তনের ঘোষণা দেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। তাতে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি, সিনেমা ও সিনেমা হল নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি বিষয় ছিলো।
এরই মধ্যে দেশটির সিনেমা হল চালু করে সিনেমা প্রদর্শন শুরু হয়েছে। আর রবিবার থেকে দেশটির রাস্তায় প্রকাশ্যে গাড়ি চালাচ্ছেন দেশটির নারীরা, যা এতদিন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিলো।
সম্প্রতি গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়েছে সৌদি বেশ কয়েকজন নারী। এরই মধ্যে গাড়ি চালানো শিখেছেন অনেকে। গত বছর সেপ্টেম্বরে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ এক ডিক্রিতে নারীদের রাস্তায় গাড়ি চালানোর অনুমতি দেন।
আন্তর্জাতিকভাবে সৌদির এমন নীতির ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এছাড়া রাজপরিবারের মধ্যেও এমন সব পরিবর্তনের জন্য বিদ্রোহের আশঙ্কার খবর বেরিয়েছে বেশ কয়েকবার। এছাড়া সম্প্রতি রিয়াদে রাজপ্রাসাদে গোলাগুলিতে ক্রাউন প্রিন্স নিহত হয়েছেন বলে খবর প্রচার করা হয়। পরে জানা যায় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে অসুস্থ ছিলেন।
তবে রাজপরিবারে যতই বিদ্রোহ দেখা দিক না কেন, নারীদের গাড়ি চালানোর আইন বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে এসব পরিবর্তন সৌদির অর্থনীতিসহ সামাজিক জীবনে বড় পরিবর্তন আনবে কি না তা সময়ই বলে দেবে।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন