প্রয়াত লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল গাদ্দাফি লিবিয়ার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার তিউনিশিয়ার রাজধানী তিউনিস থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফের একজন ক্যাম্পেইন মুখপাত্র এই তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ‘লিবিয়ান পপুলার ফ্রন্ট’ পার্টির নেতা আইমান আবু রাজ জানান, প্রয়াত লিবীয় নেতার ছেলে সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাবেন; যেখানে সকল লিবীয়দের কল্যাণে পুর্নগঠনের বিষয়ে ফোকাস করা হবে।
সাইফ গাদ্দাফি বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) একজন ফেরারি। ২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত অভ্যুত্থানে তার বাবা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ওই সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৫ সালে ত্রিপোলির একটি আদালত তার অনুপস্থিতি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
রাজধানী ত্রিপোলির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ‘জিনতান’ এলাকা থেকে বিদ্রোহীরা সাইফকে আটক করে। পূর্ব লিবিয়া ভিত্তিক পার্লামেন্টে অ্যামনেস্টি ল’ বা সাধারণ ক্ষমা আইন পাস করলে ২০১৭ সালে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
এরপর থেকেই তার কোনো হদিস নেই। তবে আইমান আবু রাজ জানান, সাইফ লিবিয়ার অভ্যন্তরেই মুক্তভাবে অবস্থান করছে। নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে খুব শিগগিরই সরাসরি লিবীয় জনগণের সম্মুখে উপস্থিত হবেন বলে রাজ জানান।
যেভাবে গাদ্দাফির মৃত্যু হয়
২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত অভ্যুত্থানের সময়ে লিবিয়ার শহর সির্তে বিশাল এক পাইপের মধ্যে গাদ্দাফি লুকিয়ে ছিলেন বা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন এবং সেই সময়েই হামলা করা হয়। বেশ কয়েকটি গুলি লেগেছিল তার শরীরে৷ মৃত্যুর সময় গাদ্দাফির পরনে ছিল হালকা রঙের পোশাক যার ফলে রক্তের প্রতি ফোঁটা স্পষ্ট চোখে পড়ছে৷
মাত্র ২৭ বছর বয়সে মুয়াম্মার গাদ্দাফি যখন লিবিয়ার শাসনক্ষমতা দখল করেন, তখন লিবীয়রা ছিল পুরোদস্তুর যাযাবর জাতি, তাদের আধুনিক রাষ্ট্র সম্পর্কে তেমন ধারণাই ছিল না। দেশের সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য নানাভাবে ছিল পশ্চিমাদের দখলে। বিপুল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও জনগণ ছিল দরিদ্র।
কিন্তু স্বৈরশাসক হওয়া সত্ত্বেও এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে সম্পদের পাহাড় গড়লেও গত চার দশকের বেশি শাসনামলে গাদ্দাফি তার দেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। দেশের মানুষের জন্য এনেছেন বিপুল সুযোগ-সুবিধা ও উন্নয়ন।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন