রাশিয়া, চীন, সৌদি আরব ও তুরস্ক, মূলত এই চার বন্ধুর আপত্তিতে সন্ত্রাসে আর্থিক মদতদাতা তকমা থেকে আপাতত বেঁচে গেল পাকিস্তান।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর বৈঠকে আমেরিকা জোরদার চেষ্টা চালিয়েছিল, যাতে সন্ত্রাসে আর্থিক মদতদাতা রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের নাম নজরদারি-তালিকায় তোলা যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে এই সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ অনেকটাই সাজিয়ে দিয়েছিল ভারত। কিন্তু বুধবার চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বে তাদের বন্ধু দেশগুলি বেঁকে বসায় আপাতত তিন মাসের রক্ষাকবচ আদায় করে নিতে পেরেছে পাকিস্তান। যা খারিজ করতে বৃহস্পতিবার সম্মেলনের শেষ দিনেও চেষ্টা চালিয়েছে আমেরিকা।
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এফএটিএফের সদস্যদের মধ্যে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার, বিশ্ব ব্যাংক, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় কমিশনের শীর্ষ কর্তারা রয়েছেন। ফলে তালিকায় নাম উঠলে এই সংস্থাগুলি মুখ ফিরিয়ে নেবে, এমন একটা আশঙ্কা পাকিস্তানের ছিলই। শেষ পর্যন্ত গোটা ঘটনাপ্রবাহকে নিজেদের ‘জয়’ হিসেবেই দেখাচ্ছে ইসলামাবাদ। কিন্তু দিল্লিও বিষয়টিকে ব্যর্থতা হিসেবে ভাবতে রাজি নয়।
বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বক্তব্য, পাক আর্থিক মদতপুষ্ট সন্ত্রাস বন্ধ করতে গত এক বছরের সুপরিকল্পিত চেষ্টার পর অনেকটাই এগোনো গেছে। প্যারিসে পাকিস্তানকে নজরদারি-তালিকায় তোলার সুযোগ ছিল ঠিকই। কিন্তু এমন চেষ্টায় সাফল্যও সচরাচর খুব চটজলদি আসে না।
দিল্লির মতে, পাকিস্তানকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে মাত্র। এর মধ্যে ইসলামাবাদকে তথ্যপ্রমাণসহ প্যারিসের নজরদার গোষ্ঠীকে আশ্বস্ত করতে হবে যে, তারা সন্ত্রাসে টাকা জোগাচ্ছে না। ‘কাজ করে দেখানোর’ চাপ থাকবে পাকিস্তানের ওপরে।
দিল্লির কর্তারা মনে করাচ্ছেন, প্যারিস সম্মেলনের ঠিক আগেই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে লস্কর প্রধান হাফিজ সাইদকে জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান।
চীন-রাশিয়া অক্ষ হয়তো মাঝেমধ্যে ভোগাবে। কিন্তু পাকিস্তান কিছুটা সংযত হলে আখেরে সেটাও দিল্লির লাভ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন