ফ্লোরিডা স্কুলের শ্যুটার নিকোলাস ক্রুজের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তার আশ্রয়দাতা পরিবার। হতাশ ও ক্ষুব্ধ এই দম্পতি বলছেন, এই ঘটনায় তাদের হৃদয় ভেঙ্গে গেছে এবং তারা বুঝতে পারেনি যে তাদের ছাদের নিচেই ভয়ঙ্কর এক ‘দানব’ বাস করছে।
এই দম্পতি হলেন-জেমস স্নেড এবং কিম্বারলি স্নেড। সোমবার মার্কিন গণমাধ্যমে এবিসি’র নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘গুড মর্নিং আমেরিকা’কে তারা বলেন, পার্কল্যান্ডের মারজরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে শুটিংয়ের শিকার পরিবারগুলোর জন্য তারা কষ্ট অনুভব করছেন।
কিম্বারলি স্নেড বলেন, ‘আমরা বিধ্বস্ত এবং আমি তাদের ব্যথা কল্পনা করতেও শিউরে ওঠছি। তাদের ভয়াবহ এই অভিজ্ঞতার জন্য আমরা দুঃখিত। এটি কখনোই ঘটা উচিত ছিল না।’
জেমস স্নেড বলেন, ‘আমি জানি, আমার কোনো কথাই তাদের ক্ষতকে দূর করতে পারবে না। আমরা গভীরভাবে তাদের আঘাত অনুভব করি।’
ক্রুজ গত সপ্তাহে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে তিনিই ছিলেন বন্দুকধারী; যার গুলিতে ১৭ জন নিহত হয়েছেন।
গণমাধ্যমকে দেয়া এটি তাদের দ্বিতীয় সাক্ষাত্কার। এর আগে তারা ‘দ্য সান সেন্টিনেল’কে দেয়া সাক্ষাতকারে তারা জানিয়েছিলেন যে, ক্রুজ এর সামাজিক মিডিয়া উপস্থিতি সম্পর্কে তারা অবগত ছিলেন না।
সর্বশেষ ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’তে এই দম্পতি তাদের ছেলের আগ্রহে ক্রুজকে তাদের সঙ্গে থাকার সুযোগ দেন।
গত বছরের নভেম্বরে ক্রুজের দত্তক মা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান এবং এক দশক আগে তার দত্তক বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ক্রুজ সম্পর্কে জেমস স্নেড বলেন, ‘সে ছিল খুবই নম্র এবং তাকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। আমরা জানতাম যে ইন্সটাগ্রামে তার একটি অ্যাকাউন্ট আছে। এটি ছাড়া অন্য কোনো অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না।’
তিনি পশুদের নিষ্ঠুর হতে পারেন-সেসম্পর্কেও এই দম্পতির কোনো ধারণা ছিল না। সিএনএনের একটি তদন্তে দেখা গেছে যে ক্রুজ একটি প্রাইভেট ইন্সটাগ্রাম গ্রুপে ছোট প্রাণিদের হত্যা করার বিষয় নিয়ে চ্যাট করত। এমনকি একটি ব্যাঙ এর পেট কেটে নাড়িভুঁড়ি বের তার ছবিও ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করেছেন।
এই দম্পতি পোষা প্রাণিদের ভালবাসেন। তাদের দুটি কুকুর এবং ছয়টি বিড়াল রয়েছে।
কিম্বারলি বলেন, ‘কাউকে যদি মনে হতো সে আমার পোষা প্রাণিদেরকে আঘাত করতে পারে, তাহলে কোনো উপায়েই তাকে আমার ঘরে ঢুকার অনুমতি দিতাম না। ছোট ছোট প্রাণি হত্যা নিয়ে তার অভিলাষ সম্পর্কে আমরা জানতাম না। এ বিষয়ে অন্যদের মতো আমরাও পরে জেনেছি। আমরা এটিকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছি এবং শুধুই বিস্মিত হয়েছি।’
ক্রুজ গ্রুপ চ্যাটে বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করত বলে সিএনএনের তদন্তে ওঠে এসেছে। দম্পতি বলেছিলেন, তারা জানত যে ক্রুজ একাকি, বিষণ্ণ এবং কিছুটা অদ্ভুত ছিল। কিন্তু আসন্ন গণহত্যা চালানোর বিষয়ে কোন লক্ষণ তারা দেখতে পাননি।
কিম্বারলি বলেন, ‘আমাদের ছাদের তলে এমন একটি জীবিত দৈত্য ছিল তা আমরা বুঝতে পারি নি।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন