‘আমরা সব সময় সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকি। বুক ভরে শ্বাস নেই, আর ভাবতে থাকি সেও কী আমাদের মতো একই সূর্য দেখতে পাচ্ছে? একইভাবে শ্বাস নিতে পারছে?’, নিজের ছোট ভাই সম্পর্কে কথাগুলো বলছিলেন সিরিয়ার বাসিন্দা আমির মাতার।
আমির বর্তমানে বসবাস করছেন জার্মানিতে। সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি জানান, ২০১৩ সালে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে আটক হন তার ছোটভাই মুহাম্মদ নূর। পেশায় তিনি একজন ফটোগ্রাফার। তারপর থেকে আর কোনো খোঁজ মেলেনি নূরের।
আমির জানান, ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি সিরিয়ায় শুরু হয় গণবিক্ষোভ। সে সময় বিক্ষোভের ওপর একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেন নূর। পরে ২০১৩ সালে আইএস দেশটির রাকা শহর দখল করে নেয়। শতাধিক মানুষকে অপহরণ করে তারা। নূরও ছিলেন সেই অপহৃতদের তালিকায়।
অপহরণের খবর পাওয়ার পর থেকেই ভাইকে খুঁজতে মরিয়া হয়ে ওঠেন আমির। গেল বছর হুতি বিদ্রোহীদের কাছে আইএসমুক্ত হয়েছে রাকা। ফলে পুরোদমে ভাইকে খুঁজতে মাঠে নেমেছেন আমির।
বিবিসিকে আমির বলেন, ‘নূরকে খুঁজতে আমি অনেক নখিপত্র সংগ্রহ করছি। সেখানে অনেকের কথা উল্লেখ করা আছে। এর মধ্যে অনেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি জানি না অপহৃতরা কোথায় রয়েছে।’
কান্না জড়ানো কণ্ঠে আমির বলেন, ‘এখন তাকে গণকবরের খোঁজ করতে হবে। আইএস যেখানে বন্দিদের রাখতো এমন আস্তানার খোঁজ মিলেছে। নূরকেও সেখানে রাখা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি।’
ভাইয়ের সন্ধানে হাল ছাড়বেন না জানিয়ে আমির বলেন, রাকা এক বাসিন্দা নূরকে খুঁজতে তাকে সাহায্য করছে। তবে আইএসের আস্তানা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
নূর নিখোঁজ হওয়ার পর নিজের পরিবারের অবস্থাও তুলে ধরেন আমির। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের কথা খুব মনে পড়ে। সে তো আমার ছোট ভাই। আমার স্বপ্নের মধ্যে আসে। আমি তাকে নিয়ে সব সময় স্বপ্ন দেখি। নুরের কারণে মা-বাবাসহ আমাদের পরিবারের সবার জীবন বদলে গেছে। সবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বদলে গেছে। এমনকি চাঁদ-সূর্যের সঙ্গেও।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন