বড়দিনের কীর্তন গেয়ে গ্রামবাসীকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চলছে, কট্টরপন্থি একটি হিন্দু গোষ্ঠীর এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে গত শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) কয়েক ডজন ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলায় হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে ওই অভিযোগকে হাস্যকর বলে অভিহিত করেছে শীর্ষস্থানীয় ক্যাথলিক সংগঠন।
সম্প্রতি ভারতে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানরা তাদের এবং গীর্জার উপর হামলা বৃদ্ধির জন্য হিন্দু কট্টরপন্থীদের এর জন্য দায়ি করছে।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কট্টরপন্থীদের দৌরাত্ন বেড়ে গেছে বলে তাদের অভিযোগ।
ক্যাথলিকরা জানায়, গ্রেফতারের পর তাঁদেরকে থানা নেয়া হলে কট্টরপন্থি হিন্দু দলের কর্মী-সমর্থকরা তাঁদের মারধর করে।
অন্য যাজকরা থানায় গেলে তাঁদেরকেও মারধর করা হয় এবং গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ভারতের ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্সের মহাসচিব থিওডোর মাসকারেনহাস।
মাসকারেনহাস বলেন, তাদের রুটিন কীর্তনের সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ২ যাজক এবং ৩২ জন শিক্ষানবিশ যাজককে সিভিল লাইন পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। তিনি বলেন, বড় দিন উপলক্ষে ২০ বছর ধরে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে।
“ধর্মান্তর প্রচেষ্টার যে অভিযোগে যাজক এবং সেমিনারীদের আটক করা হয় তা অসার ও হাস্যকর,” বলেন তিনি।
পুলিশ জানায় যে খ্রিস্টানদের একটি দল ধর্মান্তরিত করছে বলে অভিযোগ পাবার পর সাতনা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই গোষ্ঠীকে আটক করেছে।
সিভিল লাইন থানার সাব-ইন্সপেক্টর মোহিনী শর্মা জানিয়েছেন, পুলিশ স্টেশনে আটককৃতদের দেখতে যাওয়া যাজকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তবে তিনি ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের লোকজনকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, থানার বাইরে মারধর করা হয়ে থাকলে কেউ অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যকস্থা নেবে।
মধ্যপ্রদেশসহ ভারতের পাঁচটি রাজ্যের আইনে বলা আছে, কেউ অন্য ধর্ম গ্রহণ করতে চাইলে তাকে সরকারি কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে। অবৈধভাবে ধর্মান্তর করা হলে এক বছর জেল হতে পারে।
ভারতের প্রায় ১.২ বিলিয়ন জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগ হিন্দু, কিন্তু এটি বিপুল সংখ্যক মুসলমান, খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধদেরও আবাসস্থল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন