অনেকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই রাহুল গান্ধী দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। অনেকেই বলতে পারেন, রাহুল রাজনীতিক হিসেবে খুব দক্ষ নন। কিন্তু এমন মত রাহুলের প্রতি সুবিচার করে না। রাহুল এখন আর তরুণ নেতা নন, গত ১৩ বছর ধরে পার্লামেন্টের সদস্য তিনি। এত বছর পর ঝানু রাজনীতিক না হয়ে উঠতে পারলেও এখন তাকে অভিজ্ঞ রাজনীতিক বলা যায়।
বিজেপি বছরের পর বছর কৌশলী প্রোপাগান্ডা আর ফেসবুক ইউটিউবে ভিডিও শেয়ার করে রাহুলের চরিত্রকে সাধারণ মানুষের সামনে একজন অনভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে বিজেপির এই নেতিবাচক প্রচারণার বিপরীত চিত্রই দেখা গেছে। দলিত শ্রেণি থেকে আসা ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ঘটনায় বা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী ছাত্রদের সঙ্গে তার ঐক্য এবং অবস্থান। সাম্প্রতিক সময়ে রাহুলের বক্তৃতা বিবৃতিগুলোতেও অভিজ্ঞ রাজনীতিকের ছাপ পাওয়া যায়।
রাহুল গান্ধী বরাবরই দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কথা বলে গেছেন। তবে এসব বিষয়ে নেওয়া তার কিছু পদক্ষেপ ছিল প্রতীকি। সম্প্রতি কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতের সবচেয়ে পুরনো দলটিকে শক্তিশালী করতে কাজ চান এখন।
আর গুজরাট বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারণায় খুবই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধী। রাহুলের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য এটি ইতিবাচক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে ভারতের রাজনীতিতে বড় চাপের মুখে আছে কংগ্রেস। বর্তমানে দলটির দ্যুতি কেবল রাজ্যিই সীমাবদ্ধ। কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টেও তাদের আসন সংখ্যা খুব বেশি নয়। এমন পরিস্থিতিতে রাহুল বিজেপির মতাদর্শের বিপরীতে একটি নতুন মতাদর্শ নিয়ে হাজির হতে পারবেন কিনা তার ওপর কংগ্রেসের অস্তিত্ব নির্ভর করছে।
গান্ধী পরিবার কংগ্রেসের নেতৃত্বে না থাকলে দল হিসেবে এটি ভেঙে পড়তে পারে। আবার নিলে আগের কথাটিও মেনে নিতে হবে রাহুল রাজনীতিক হিসেবে একেবারে ব্যর্থ নন, আবার ঝানুও নন। এই উভয় সংকটের রাহুল দলের ঐক্য ধরে রাখতে নেতৃত্ব দিতে পারেন। কিন্তু দলটির অস্তিত্বের লড়াইয়ে নতুন উদ্দীপ্ত অন্য একজন নেতার কোনো বিকল্প নেই। যেমনটি দেখা গিয়েছিলো সোনিয়া-মনমোহন সরকারের ক্ষেত্রে।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন