ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ‘রাসায়নিক অস্ত্র’ ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে)-এর প্রেসিডেন্ট সরদার মাসুদ খান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রবিবার ইসলামাবাদে এক বক্তৃতায় তিনি এ অভিযোগ করেন। ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের কারণে অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
চলতি বছরের শুরু থেকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মত এই ধরনের গুরুতর অভিযোগ আনে পাকিস্তান।
বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চুক্তি, বিশেষ করে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনে শুধু আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সংঘাতই নয় যেকোনো পরিস্থিতিতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সরদার খান দাবি করেন যে অধিকৃত কাশ্মীরে জনসংখ্যার অনুপাত পরিবর্তনের চেষ্টা করছে ভারত।
এর আগেও এজেকে প্রেসিডেন্ট দাবি করেছিলেন যে কাশ্মীরের স্বাধীনতা সংগ্রাম দমন করতে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে জনসংখ্যার অনুপাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। অধিকৃত কাশ্মীরে নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি ভারত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধও করছে বলে খান অভিযোগ করেন।
সম্প্রতি ব্রাসেলস ও ওয়াশিংটন সফরকালে তিনি কাশ্মীর বিরোধ নিস্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন উল্লেখ করে মাসুদ খান বলেন, ‘কাশ্মীর বিরোধ নিস্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি।’
সমাধান খুঁজে পেতে পাকিস্তানকে অবশ্যই দৃঢ় থাকতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামীদের খতম করার নির্দেশ ভারত সরকারের
মুসলিম প্রধান জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকায় মোতায়েন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের খতম করার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি সরকার। ফলে সেখানে স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান আরো তীব্র করা হবে বলে এক সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআই’কে জানিয়েছেন।
কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ১৫ নভেম্বর দিল্লিতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকে ওই নির্দেশ দেয়া হয়। সম্প্রতি কাশ্মির উপত্যকায় সহিংসতার হার বেড়ে গেছে এবং জঙ্গিরা নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যকে হত্যা করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সিতারামন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান আগের চেয়ে অনেক কঠোর করা হবে। উপত্যকায় স্থায়ী শান্তি আনার প্রচেষ্টা হিসেবে সরকার সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে ধনেশ্বর শর্মাকে বিশেষ প্রতিনিধি নিয়োগ দিলেও দমন অভিযান চলবে।
নিরাপত্তা বাহিনী ইতোমধ্যে কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গি বিরোধী অভিযান জোরদার করেছে।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিচালক এসপি ভাইদ সম্প্রতি বলেন, চলতি বছর নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ১৭০ জনের মতো জঙ্গিকে হত্যা করেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন