ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে যে আঙুল বা হাতগুলো উঠবে তা কেটে দেয়ার জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন এক বিজেপি নেতা। বিহার বিজেপির প্রধান নিত্যানন্দ রাই সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছেন।
বিহারের উজিয়ারপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি বিজেপি’র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বৈশ্য ও কানু সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে নিত্যানন্দ রাই বলেন, ‘যখন নরেন্দ্র মোদীকে তার মা খাবার খাওয়াতেন, তখন সেই থালায় মা তার ছেলেকে দেখতে পেতেন না আবার ছেলেও তার মাকে দেখতে পেতেন না। সেই অবস্থা থেকে উঠে এসে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এক গরিবের ছেলে...প্রত্যেক নাগরিকের এ জন্য গর্ববোধ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো আঙুল বা হাত যদি ওঠে, তাহলে আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে তা ভেঙে দিতে হবে, প্রয়োজনে কেটে ফেলতে হবে।’
বৈশালীর জাঁদরেল যাদব নেতা রাইকে বিহার বিজেপি’র সভাপতি করা হয় গত বছর। হাজিপুরের বিধায়ক থাকাকালীন ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে উজিয়ারপুরে লড়ার মনোনয়ন পান তিনি। সেই আসনে জিতে তিনি লোকসভার সংসদ সদস্য হন।
কালো অর্থ নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে মোদী
বিদেশে গচ্ছিত কালো অর্থ নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার। এবার ‘প্যারাডাইস পেপার্স’ নামের নথিতে ক্ষমতাসীনদের নাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মোদী।
সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের তদন্তে জানা গেছে, কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশগুলোতে অর্থ পাচার, লগ্নি বা লেনদেন সংক্রান্ত নথিতে ৭১৪ জন ভারতীয়ের নাম রয়েছে। এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত তালিকায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা, বিজেপি সংসদ সদস্য আর কে সিনহা, কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত, অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, ব্রিটেনে আশ্রয় নেয়া শিল্পপতি বিজয় মাল্যের পাশাপাশি আরো একঝাঁক নেতা, শিল্পপতি, বলিউডের অভিনেতা, চিকিৎসকের নাম রয়েছে। ভারতের বহু কর্পোরেট সংস্থার নামও রয়েছে ‘প্যারাডাইস পেপার্স’ নামের এই নথিতে।
কালো অর্থের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও নরেন্দ্র মোদীর সাড়ে তিন বছরের শাসনে এইচএসবিসি-নথি কেলেঙ্কারি এবং ‘পানামা পেপার্স’ ফাঁস হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই দুই নথিতেই বহু ভারতীয়র বিদেশে কালো টাকা গচ্ছিত রাখার খবর মিললেও মোদী সরকার সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপই নেননি।
অথচ পানামা পেপার্স-তদন্তের জেরেই পাকিস্তানের খোদ প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয়েছে। এর মধ্যেই মোদী সরকারের চাপ বাড়িয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিনহার পদত্যাগও দাবি করেছে কংগ্রেস।
অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন তথ্যের ভিত্তিতে অবিলম্বে যথোচিত পদক্ষেপ নেয়া হবে। কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের চেয়ারম্যানের অধীনে তৈরি ‘মাল্টি এজেন্সি গ্রুপ’ এই তদন্তে নজরদারি চালাবে। যাতে আয়কর দফতর, ইডি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, আর্থিক গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারাও থাকবেন। সেবি-ও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে। তা ছাড়া এ পর্যন্ত অন্যান্য তদন্তের ক্ষেত্রে যা যা তথ্য মিলেছে, সব ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও সরকারের দাবি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রের যুক্তি, বিদেশে অর্থ গচ্ছিত রাখা মানেই তা কালো অর্থ বা বেআইনি নয়। যদি না এ দেশের আয়কর দফতরের থেকে তা গোপন করা হয়ে থাকে। এই যুক্তি দিয়েই জয়ন্ত সিনহা বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত স্তরে কিছু করিনি। যে সংস্থার হয়ে কাজ করতাম, তার হয়েই যা করার করেছি। সব তথ্যই সরকারি সংস্থাকে জানানো রয়েছে।’
কী এই ‘প্যারাডাইস পেপার্স’? প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ নথি মূলত বারমুডার আইন সংস্থা অ্যাপলবাই ও সিঙ্গাপুরের এশিয়াসিটি সংস্থার মধ্যে তথ্যের আদানপ্রদান। এই সংস্থা দু’টি মূলত কর ফাঁকি দিতে বিভিন্ন সংস্থাকে কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশে লগ্নিতে সাহায্য করে। বহু দেশের রাঘববোয়ালেরই নাম রয়েছে তাতে।
কোন দেশ থেকে কত জন রয়েছেন, সেই হিসেবে ভারতের স্থান প্রথম সারিতেই। ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৯ নম্বরে!
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন