ভারতের গুজরাটে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজ্ঞাপনটিতে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক উপাদান রয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ তুলেছেন। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, জনমানবহীন পথ দিয়ে এক নারী হেঁটে বাড়ি ফিরছে। চোখে-মুখে তার তীব্র আতঙ্কের ছাপ। নেপথ্যে শোনা যাচ্ছে আজানের সুর’।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সম্প্রতি প্রকাশ হওয়া এই ভিডিওটি গুজরাটে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনের আগে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিশানা করে নির্মাণ করা হয়েছে। ভিডিওতে স্পষ্ট বার্তা দেয়া হচ্ছে যে, ‘গুজরাটে বিজেপি ক্ষমতায় না এলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন হিন্দু নারীরা’।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে গুজরাট রাজ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোর লড়াই চলছে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। একে অপরকে নানাভাবে দোষারোপ করতে কেউ কম যাচ্ছে না।
ভিডিও’তে দেখা যায়, ফাঁকা রাস্তায় একা হেঁটে যাচ্ছেন এক যুবতী। ভেসে আসছে আজানের সুর। নিচে লেখা, ‘সন্ধ্যে ৭টার পর গুজরাটে এমন পরিস্থিতি হতে পারে।’
যুবতী বাড়ি পৌঁছালে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে তার বাবা বলেন, ‘২২ বছর আগে গুজরাটে এমনটাই হত।’ তবে এখানেই শেষ নয়! তিনি আরও বলেন, ‘ওই লোকগুলি ক্ষমতায় এলে আবারও সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি ফিরে আসবে।’ তারপরই মা-বাবাকে আশ্বস্ত করে যুবতী বলেন, ‘ভয়ের কিছু নেই। মোদি আছেন।’ একই সঙ্গে ফুটেজের নিচে লেখা আছে ‘আমার ভোট, আমার সুরক্ষা’।
ভিডিওটি প্রকাশের পর অবশ্য রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে গোবিন্দ পারমার নামে রাজ্যের এক আইনজীবী এ নিয়ে সরব হয়েছেন । ভিডিওটি নিয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য পুলিশের কাছে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই আইনজীবীর দাবি, সাম্প্রদায়িক হিংসা উস্কে রাজনৈতিক মুনাফা লুটের উদ্দেশ্যেই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে।
তার অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে সদ্য প্রকাশ্যে আসা ভিডিওটি গেরুয়া শিবিরের কারসাজি। অবশ্য এই ঘটনায় রাজ্যের বিজেপি নেতাদের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের রাজনীতির হাতিয়ার ওই বিতর্কিত ভিডিও। ধর্মের ভিত্তিতে আবেগ উসকে ভোট পাওয়ার জন্যই তা বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের দিকেই আঙুল তুলেছেন গুজরাট কংগ্রেসের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের নেতা রোহন গুপ্তা। তার অভিযোগ, নির্বাচনে ফায়দা লুটতেই এই ঘৃণ্য কাজ করেছে বিজেপি।
এরই মধ্যে অবশ্য বিজেপিকে টেক্কা দিতে পাল্টা অনলাইন প্রচারে নেমেছে কংগ্রেস। সব মিলিয়ে গুজরাটে এই মুহূর্তে নির্বাচনী উত্তেজনা তুঙ্গে। তবে বিজেপি দুর্গে সোনিয়া, রাহুলের দল ভাঙন ধরাতে পারবেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন