এবার জানা গেল যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের একজন বিচারপতির যৌন কেলেঙ্কারির কথা। বিল ও’নিল নামের সুপ্রিম কোর্টের ওই বিচারপতি নিজেই স্বীকার করেছেন, এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৫০ জন অসম্ভব সুন্দরী নারীর সঙ্গে যৌন সংসর্গ করেছেন।
আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার বিচারপতি বিল ও’নিল তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করে ওই দাবি করেছেন। বিল এবার অঙ্গরাজ্যে গভর্নর পদে ডেমোক্রেটিক দলের হয়ে নির্বাচন করবেন। ফেসবুক পোস্টটি শেয়ার হওয়ার পর এ নিয়ে আলোচনাও চলছে বেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচারপতি বিল ও’নিলের যৌনতা নিয়ে ওই ফেসবুক পোস্টের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ওহাইও ডেমোক্র্যাটস।
ফেসবুক পেজে বিচারপতি বিল লিখেছেন, ‘পুরুষদের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি যৌনতা নিয়ে এখন কথা বলার সময় এসেছে। গত ৫০ বছরে আমি প্রায় ৫০ জন অসম্ভব সুন্দরী নারীর সঙ্গে যৌন সংসর্গ করেছি।’
৭০ বছর বয়সী এই বিচারপতি আরও লিখেছেন, ‘ওই ৫০ নারীর মধ্যে একজন ছিলেন সিনেটর বব টাফটের ব্যক্তিগত সহকারী। আমার প্রথম ও সত্যিকারের ভালোবাসার নারী ছিলেন তিনি। আমরা তাঁর বাড়ির গোয়ালঘরেই অন্তরঙ্গ হয়েছিলাম।’
ক্লিভল্যান্ড ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিল ও’নিল নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ফেসবুক পোস্টটি তিনি নিজেই লিখেছেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতির যৌন জীবনের ঘটনা ফাঁস হওয়াটা খারাপ কিছু নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে বিচারপতি হিসেবে বিলের মেয়াদ শেষ হবে। তবে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কঠোর সমালোচনাও করেছেন।
এক নারী বিচারপতি বিলকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, ‘আপনি এখন আবর্জনায় পরিণত হয়েছেন।’
ওহাইও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মওরিন ও’কনর এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘সহকর্মীর এমন মন্তব্যে যতটা আহত হয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
সিনসিনাটি সিটি কাউন্সিলর ক্রিস সিলবাচ এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, ‘আপনি (বিচারপতি বিল ও’নিল) যে শুধু আমার সমর্থন হারালেন তা নয়, আমার কাছ থেকে সম্মানটুকুও আপনি হারালেন।’
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি ও রাজনীতিকদের চাপের মুখে গতকাল সন্ধ্যায় ফেসবুক পেজ থেকে বিতর্কিত ওই পোস্টটি মুছে ফেলতে বাধ্য হন বিল। পরে নতুন আরেকটি পোস্ট করেন তিনি।
নতুন করে দেওয়া পোস্টে বিল লিখছেন, ‘আপনারা যাঁরা আমার পদত্যাগ চাচ্ছেন, জেনে রাখুন আমি একজন আইনজীবী। আপনাদের জন্মেরও আগে থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষে যৌন নির্যাতন নিয়ে কাজ করছি।’ তিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে পদত্যাগ করবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন।
সম্প্রতি মিনেসোটার সিনেটর আল ফ্রাঙ্কেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন মার্কিন মডেল লিন টুইডেন। পরে ফ্রাঙ্কেন তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। অ্যালাবামার সিনেটর প্রার্থী রিপাবলিকান দলের রয় মুরের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনেছেন কয়েকজন নারী। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিল ও’নিল ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন। কারণ তিনি নিজেও গভর্নর পদে নির্বাচন করবেন। তাঁর ক্ষেত্রেও এমন নোংরা রাজনীতি হতে পারে—এই আশঙ্কায় ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন বিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন