প্রতিদিন সাড়ে ৪ শ কোটির মতো পোস্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুবাদ করে ফেসবুক। এ প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্ম।
আরো প্রযুক্তির প্রয়োগে উন্নত হচ্ছে ফেসবুকের অনুবাদ অংশ। কিন্তু এটা যে এখনো নিখুঁত হয়নি, তার প্রমাণ দিল এক বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
গত সপ্তাহে এক ফিলিস্তিনির ভাগ্যে বিপদ নেমে এলো। তিনি ইসরায়েলের এক কনস্ট্রাকশন সাইটে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। পশ্চিমতীরে চলছিল কাজ। একদিন সকালে সাইটের এক বুলডোজারের সামনে দাঁড়িয়ে একটা ছবি তুললেন। ওটার সঙ্গে আরবিতে লিখলেন 'শুভ সকাল'। এই আরবি ভাষাকে অনুবাদ করল ফেসবুকের অটোমেটিক ট্রান্সলেশন প্লাটফর্ম। আর ঘটিয়ে দিল বিপদ।
তার আরবিতে লেখা 'শুভ সকাল' হিব্রুতে হয়ে গেল 'তাদের ওপর আক্রমণ কর'। আর ইংরেজিতে হলো 'তাদের আঘাত কর'। আর কি রক্ষা আছে? ইসরায়েলে কর্মরত এক ফিলিস্তিনি যদি এমন পোস্ট দেন, তাকে গ্রেপ্তার না করে পারা যায়?
তবে ইসরায়েলের দৈনিক পত্রিকা হারেৎজ আসল ঘটনা তুলে আনে। সেখানে বলা হয়, আরবি ভাষাকে ফেসবুক যেভাবে অনুবাদ করে তাতে অনেক ভুল রয়ে গেছে। তার আরবি শব্দের অনুবাদে ফেসবুক 'আঘাত করা' ক্রিয়া বেছে নিয়েছে। অবশ্য আরবি ভাষাভাষিরা অনুবাদের ভুল পুরোপুরি বুঝতে পারবেন।
গুগল ট্রান্সলেটও একই ভুল করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে। গুগল অনুবাদ করেছে 'বিকাম দেম'। আসলে আরবিতে সকাল শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো 'দিনের আগমন'।
জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েলি পুলিশ অনেকের কাছ থেকে পোস্টটি বিষয়ে অভিযোগ পায়। সঙ্গে সঙ্গে একে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে ধরে নেয় তারা। বুলডোজারের ছবি থাকায় পুলিশ ধরেই নিয়েছিল ওটা দিয়েই কোনো ধ্বংসলীলা চালাবেন পোস্ট প্রদানকারী ফিলিস্তিনি। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে আরবি বোঝেন এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা পোস্টটি দেখার আগেই তাকে হাজতে পোরে ইসরায়েলি পুলিশ। পরে অবশ্য ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটেছে। তবে কেটে গেছে কয়েক ঘণ্টা।
২০১১ সালে ফেসবুক অনুবাদের প্লাটফর্মের পরিচয় ঘটায় ব্যবহারকারীদের। পরে তারা অনুবাদের কাজে মাইক্রোসফটের বিং ব্যবহার করে। ২০১৫ সালের দিকে তারা নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনুবাদ প্রযুক্তির প্রয়োগে নিজেরাই অনুবাদের কাজটি করা শুরু করেছে। ২০১৬ সালে ব্যবহারকারীরা তাদের পোস্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুবাদ হয়ে যাওয়ার সুবিধা পেতে শুরু করেন।
সূত্র : কোয়ার্টজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন