২০১৩ সালে অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েই ইতিহাস গড়েছিলেন সেবাস্তিয়ান কুর্জ। ইউরোপের তরুণতম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কুর্জ শপথ গ্রহণ করেছিলেন মাত্র ২৭ বছর বয়সে। চার বছর পর সেই কুর্জ এখন বিশ্বের কনিষ্ঠতম রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার পথে!
মাত্র ৩১ বছর বয়সে অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার পথে সেবাস্তিয়ান কুর্জ। ছবি: এএফপি
অস্ট্রিয়ায় রোববার সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে (মোট ভোটের ৩১ শতাংশ) জয়লাভ করেছে কুর্জের নেতৃত্বাধীন পিপলস পার্টি (ওভিপি)। আর এতেই মাত্র ৩১ বছর বয়সে কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে ইতিহাস গড়ার দুয়ার খুলে যায় কুর্জের। অথচ মাত্র আট বছর আগেই ওভিপির যুব শাখার চেয়ারম্যান ছিলেন কুর্জ। সবকিছু ঠিক থাকলে সমর্থকদের আদরের ‘ভুন্ডারভুৎসি’ (অস্ট্রিয়ান ভাষায় বিস্ময় বালক) কুর্জই হতে যাচ্ছেন দেশটির নতুন চ্যান্সেলর।
রবার্ট প্যাটিনসন, মেগান ফক্স, দীপিকা পাড়ুকোন, লিন্ডসে লোহানদের সমবয়সী কুর্জের জন্ম ১৯৮৬ সালে। এত অল্প বয়সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পথে থাকা কুর্জ ‘মিলেনিয়াল’ (যাঁদের জন্ম ১৯৮২ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে) প্রজন্মেরও একজন। কিন্তু তাঁর মতো এমন না হলেও ধারে-কাছে আছেন আর কজন—আসুন জেনে নিই
ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ। ছবি: এএফপি
ইমানুয়েল ম্যাখোঁ
এ বছরের মে মাসে ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হয়ে সবাইকে চমকে দেন ইমানুয়েল ম্যাঁখো। অথচ তিন বছর আগেও তাঁকে ফরাসি নাগরিকেরা সেভাবে চিনত না। এক বছর আগেও তাঁর নিজের কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। কিন্তু বিশ্বজয়ী বীর নেপোলিয়নের পর তিনিই এখন ফ্রান্সের সবচেয়ে তরুণ নেতা। জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যেও ম্যাখোঁ সবচেয়ে তরুণ নেতা।
তরুণ বয়সে উত্তর কোরিয়ার শাসনভার গ্রহণ করেন কিম জং-উন। ছবি: এএফপি
কিম জং-উন
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা। ২০১১ সালে বাবা কিম জং-ইলের মৃত্যুর পর দেশটির সর্বোচ্চ নেতা ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে আসীন হন কিম জং-উন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ভীষণ অপছন্দের কিমের জীবন নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, উত্তর কোরিয়ার মাথাপিছু বার্ষিক আয়ের তুলনায় কিম জং–উনের কনিয়াক মদের পেছনে খরচ ৮০০ গুণ বেশি! দক্ষিণ কোরিয়ার দ্য ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজির তথ্যানুসারে, কিম জং–উন ক্ষমতায় আসার পর গত বছর পর্যন্ত মোট ৩৪০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এর কোন তথ্য বিশ্বাস করবেন, কোনটি পশ্চিমা মিডিয়ার বানানো গালগপ্প, কে জানে। অদ্ভুতুড়ে, রহস্যময়, বিলাসবহুল এবং নিষ্ঠুর শাসক হিসেবে চিত্রিত করা হয় তাঁকে। তবে কিম জং-উন যে রহস্যময় আলোচিত এক চরিত্র, সন্দেহ নেই।
বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। ছবি: এএফপি
ফিদেল কাস্ত্রো
কিউবান বিপ্লবের সিংহপুরুষ। বাতিস্তা সরকারকে উৎখাত করে ১৯৫৯ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে কিউবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন ফিদেল কাস্ত্রো। লাতিন আমেরিকার ইতিহাসে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ নেতা। প্রায় পাঁচ দশক ধরে ক্ষমতায় থাকাকালীন কাস্ত্রো পার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ প্রেসিডেন্টের শাসনকাল। এ ছাড়া মোকাবিলা করেছিলেন ৬৩৮টি হত্যাচেষ্টা।
ইংল্যান্ডের কবিতা প্রধানমন্ত্রী ইউরিয়া দ্য পিট। ছবি: উইকিপিডিয়া
উইলিয়াম পিট দ্য ইয়োঙ্গার
১৭৮৩ সালে উইলিয়াম পিট যখন ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৪ বছর ৬ মাস ২১ দিন। কম বয়সের কারণে শুরুতে তাঁকে কেউ সেভাবে মেনে নেয়নি। লোকজন বলত, ‘স্কুলপড়ুয়ার ওপর আস্থা রেখেছে রাজ্য।’ কিন্তু পরে আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেনকে একীভূত রাখার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি। ইংল্যান্ডের ইতিহাসে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।
মাত্র তিন বছর বয়সে তোরো রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করেন ওয়ো। ছবি: রয়টার্স
রাজা ওয়ো
ওয়ো নিয়াম্বা কাদাম্বা ইগুরু রুকিদি। পিতৃপ্রদত্ত এ নাম নয়, তাঁকে ‘কিং ওয়ো’ নামেই চেনে বিশ্ব। উগান্ডার পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য তোরোর শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন মাত্র তিন বছর বয়সে! অর্থাৎ রাজত্ব চালানো শুরুর ১৫ বছর পর তিনি সাবালক হন। বাবা মারা যাওয়ায় ১৯৯৫ সালে তোরোর শাসনভার তুলে নিতে হয় ওয়োকে। ১৮ বছর পূর্ণ করার আগ পর্যন্ত তাঁর হয়ে রাজ্যশাসন করেছে উপদেষ্টা কমিটি। ১৮ বছরে পা দিয়ে শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেন ওয়ো। এখন তাঁর বয়স ২৫ বছর।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন