নওগাঁয় আম চাষিদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে। আম পাড়ার সময়সূচি নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি অফিস। আগামী ২২ মে গুটি আম পাড়ার মধ্য দিয়ে আম নামানো শুরু হবে। চাষিরা বলছেন- এ বছর প্রচণ্ড দাবদাহ ও খরায় আম বাগানের যত্ন ও পরিচর্চা বেশি করতে হয়েছে।
বিগত বছরের তুলনায় ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গুটি/স্থানীয় জাতের ২২ মে, গোপালভোগ ৩০ মে, ক্ষিরসাপাত/হিমসাগর ২ জুন, নাক ফজলি ৫ জুন, ল্যাংড়া/হাড়িভাঙ্গা ১০ জনু, আম্রোপালি ২০ জুন, ফজলি ২৫জুন এবং আশ্বিনা/বারি-৪/বারি-১১/গৌড়মতি/কাটিমন ১০ জুলাই আম পাড়ার ক্যালেন্ডর প্রকাশ করা হয়।
এ বছর ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের আশা নিয়ে ৩৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান গড়ে উঠেছে। ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি, কাটিমন, গৌড়মতি, বারি আমচাসহ দেশি-বিদেশ মিলে প্রায় ১৬ জাতের আম চাষ হয়েছে।
জাত ভেদে আম বাগানের পরিমাণ নাক ফজলি ৮৯৮ হেক্টর, ল্যাংড়া ১ হাজার ৬১৫ হেক্টর, ফজলি ১ হাজার ৪০৮ হেক্টর, গোপালভোগ ৬১০ হেক্টর, খিরসাপাত ১ হাজার ৪৭ হেক্টর, বারি-৪ আম ২ হাজার ৪০২ হেক্টর, বারি-১১ আম ৪২ দশমিক ৫০ হেক্টর, মল্লিকা ৩৭ হেক্টর, কাটিমন ১৫৪ দশমিক ৫০ হেক্টর, গৌড়মতি ১৪৩ দশমিক ২৫ হেক্টর, ভাড়িভাঙা ৪১ দশমিক ৭৫ হেক্টর, ব্যানানা ম্যাংগো ১০৭ দশমিক ৫০ হেক্টর, আশি^না ২ হাজার ৩২২ দশমিক ৫০ হেক্টর, কুমড়াজ্বালি ১৩ হেক্টর, গুটি/ স্থানীয় ৬০৭ হেক্টর এবং আম্রপালি ১৮ হাজার ৪২২ হেক্টর। জেলা যে পরিমাণ আম বাগান রয়েছে তার মধ্যে আম্রপালি ৬০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বরেন্দ্র এলাকা হওয়ায় নওগাঁর আম সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় জেলায় ৬০ শতাংশ বাগানই আম্রোপালি।
এ জেলার আম ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ জেলার আম বিদেশেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।
আম চাষিরা বলছেন, এ বছর প্রচণ্ড দাবদাহ ও খরায় অনেক আমের গুটি ঝরে পড়েছে। এতে গাছে কম পরিমাণ আম রয়েছে। তবে যেটুকু আম রয়েছে আকারে বড়।
প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না আসলে লাভবান হতে পারবেন তারা।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আম চাষিরা বাগানের পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার আম উৎপাদনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশা। স্বাদ ও দাম ভালো পাওয়ায় আম্রোপালি, বারি ও ব্যানানা জাতের বাগানের পরিমাণ বাড়ছে। রপ্তানি পরিসর বাড়াতে উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমের ফুড প্রসেসিং প্রক্রিয়াজাত করতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন