কক্সবাজারের টেকনাফে ‘মাত্র ৫০০ টাকা পাওনার’ বিরোধের জেরে ‘ইফতারের প্রস্তুতির’ সময় ঘরে ঢুকে গুলি করে এক যুবককে খুন করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহত মোহাম্মদ জুবায়ের (২২) পেশায় একজন দর্জি শ্রমিক। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের আগ মুহূর্তে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়ায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি।
স্বজনদের বরাতে ওসমান গনি বলেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়ার স্থানীয় মো. কায়েসের দোকান থেকে বাকিতে মোহাম্মদ জুবায়ের কিছু মালামাল কিনছিলেন। এ নিয়ে বুধবার উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়ভাবে ওই বিরোধের মীমাংসাও হয়। কিন্তু শুক্রবার জুবায়ের গুলিবিদ্ধ হলে স্বজনরা উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। রাতে সেখানে আনা হলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠান। পরে রাত ১১টার দিকে চমেকে নেওয়ার পথে রামু উপজেলার চা বাগান এলাকায় জুবায়ের মারা যান।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, ঘটনার ব্যাপারে দোকানি কায়েস তার মামা নজমুদ্দিনকে জানায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় কোনো ধরনের উসকানি ছাড়া নজমুদ্দিনের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক মোহাম্মদ জুবায়েরের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা এক পর্যায়ে জুবায়েরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
নিহতের বড় ভাই আব্দুস সাত্তার বলেন, স্থানীয় দোকানি কায়েস তার ভাই জুবায়েরের কাছে বাকিতে মালামাল ক্রয় বাবদ ৫০০ টাকার কিছু বেশি পাওনা ছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদের ঘটনা ঘটলেও পরে স্থানীয়ভাবে বিরোধের মীমাংসাও হয়েছে। পরে ঘটনার ব্যাপারে দোকানি কায়েস তার মামা নজমুদ্দিনকে জানায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় জুবায়ের বাড়িতে খাবার সামগ্রী নিয়ে ইফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হক ওরফে এনাম মেম্বারের ইন্ধনে নজমুদ্দিন ও তার ভাই ফিরোজের নেতৃত্বে ৮/১০ জন আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা এক পর্যায়ে জুবায়েরকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি গুলি ছুড়ে। এতে সে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের মালিকানাধীন কিছু পরিমাণ জমি জবরদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে ইউপি সদস্য এনামুল হকের নেতৃত্বে প্রভাবশালী একটি চক্র। মূলত সেটাকে আড়াল করতে চক্রটি ঘটনাটি পাওনা টাকার বিরোধকে পুঁজি করে ঘটেছে বলে বিভিন্ন মহলে প্রচারে নেমেছে।
ওসি ওসমান গনি জানান, ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের পাশাপাশি জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন