যশোরের মনিরামপুরে নির্বাচনী পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে লজ্জায় ও ক্ষোভে গলায় ফাঁস দিয়ে সাবিনা খাতুন (১৭) নামের দ্বাদশ শ্রেণির এক কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। আজ শনিবার উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে। পুলিশ তার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, সাবিনা উপজেলার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। নির্বাচনী পরীক্ষায় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সে। তার বিরুদ্ধে পরীক্ষার হলে নকলের অভিযোগ ওঠে। বাড়ি ফিরে লজ্জায় ও ক্ষোভে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
বাগডাঙ্গা গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ সাবিনার বিষয়ে জানান, পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষক দেড় ঘণ্টা তার খাতা আটকে রাখায় সে আর লিখতে পারেনি। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে একটি কাগজে সব ঘটনা লেখে সাবিনা। এরপর তার ঘরের দরজা লাগিয়ে আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। এক সময় মেয়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে এবং ঘরে ওই দৃশ্য দেখে তার মা চিৎকার দেন। এরপর আশপাশের লোকজন এসে সাবিনার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
সুইসাইড নোটে কলেজছাত্রী যা লিখেছিল- আমার কিছু মনে থাকে না বলে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে আমি অল্প একটু কাগজে তথ্য লিখে পড়তে পড়তে কক্ষে যাই। পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় তা ফেলে দিতে মনে ছিল না। পরীক্ষার মধ্যে কলেজের সমাজ-বিজ্ঞানের শিক্ষক তা দেখে ফেলেন। তিনি খাতা নিয়ে দেড় ঘণ্টা আটকে রাখেন। আমি তার কাছে ভুল স্বীকার করেছি। তারপরও তাসলিমা ম্যাডাম ও ইসমাইল স্যার আমাকে পরীক্ষা দিতে দিল না। তাড়িয়ে দিলেন। আমি লজ্জায় মুখ দেখাতে না পেরে দুনিয়া ছেড়ে চলে যাচ্ছি। ভুলত্রুটি মাফ করে দিও। আমার কাছে ফারহানা ২৫ টাকা ও সুবর্ণা ৫ টাকা পাবে। তোমরা দিয়ে দিও।
এ বিষয়ে গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম জানান, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শিক্ষক তাসলিমা খাতুন ও ইসমাইল হোসেন কক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলছি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।
মনিরামপুর থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুটও পেয়েছি। এই ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে। লাশ মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন