শিশু আয়াতের লাশের খণ্ডিত অংশের সন্ধানে আবীরকে নিয়ে অভিযান।ফাইল ছবি
চট্টগ্রামে পাঁচ বছর বয়সী শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতের খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আবীর আলীর বাসায় পাওয়া রক্তের নমুনার সাথে আয়াতের ডিএনএ’র মিল পাওয়া গেছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি’র ফরেনসিক ল্যাবের করা ডিএনএ বিশ্লেষণের প্রতিবেদন সম্প্রতি হাতে পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনোজ দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আবীর আলীর ঘরের মালামাল রাখার শেডে জমে থাকা রক্তের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছিল। আর আয়াতের ডিএনএ প্রোফাইল করা হয় সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে।
“সম্প্রতি সেই সোয়াবের সাথে ডিএনএ প্রোফাইলের মিল পাওয়ার প্রতিবেদন ল্যাব থেকে আমরা হাতে পেয়েছি।”
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মনোজ বলেন, “মামলার তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও পাওয়া গেছে। এখন আরেকটা প্রতিবেদনের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। সেটি পেলেই অভিযোগপত্র জমা দিতে পারব।”
চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার নয়ারহাট ওয়াছমুন্সী বাড়ির সোহেল রানার মেয়ে আলিনা ইসলাম আয়াত (৫) গত বছরের ১৪ নভেম্বর বিকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ঘরের পাশে মসজিদে আরবি পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল সে।
এরপর তদন্তে নেমে পিবিআই আয়াতের প্রতিবেশী আবীর আলী (১৯) নামের এক তরুণকে আটক করে। ২৫ নভেম্বর সে পুলিশকে জানায়, আয়াতকে খুনের পর লাশ ছয় টুকরো করে সাগরের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে।
তখন পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তার আবীরের পরিবার প্রায় ২১ বছর ধরে নয়ারহাটে আয়াতদের ভাড়াটিয়া ছিল। তার জন্মও ওই বাড়িতে। তবে বাবা-মা’র ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় আয়াত হত্যার কিছু দিন আগে পকেট বাজার এলাকায় আলাদা একটি বাসায় ভাড়া নিয়েছিল তার মা। ওই বাসায় আয়াতের লাশ নিয়ে রেখেছিল আবীর, আর লাশ গোপনের জন্য তা ছয় টুকরা করেছিল সে।
জিজ্ঞাসাবাদে আবীর জানিয়েছিল, আয়াতদের নিচ তলায় যে বাসাটিতে তার বাবা থাকেন, সেটির চাবি তার কাছেও ছিল। ১৪ নভেম্বর বিকালে আয়াতকে কোলে নিয়ে তাদের ঘরে ঢুকয়ে ফেলে। অল্প সময়ের মধ্যেই শ্বাসরোধ করে খুন করে।
আবীরকে নিয়ে পিবিআই সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি এবং আয়াতের জুতা উদ্ধার করে। ৩০ নভেম্বর আউটার রিং রোডের আকমল আলী ঘাট সংলগ্ন স্লুইচ গেইটের এক গর্ত থেকে আয়াতের দুই পা এবং পরদিন খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করে পিবিআই।
এ ঘটনায় আয়াতের বাবা ইপিজেড থানায় একটি হত্যা মামলা করেন, যার তদন্ত করছে পিবিআই।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র্যাব আবীরের বাবা, মা ও ছোট বোনকে গ্রেপ্তার করে। আর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জেনেও গোপন রাখার অভিযোগে ১৭ বছর বয়সী অপর এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন