প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই ১২ বছর বয়সী মেয়ে পপি সরকারকে হত্যা করেন বাবা দিগিন্দ নম―জানিয়েছেন কুলাউড়া থানার ওসি মো. আব্দুছ ছালেক। আজ রবিবার দুপুরে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ওসি বলেন, ‘দিগিন্দ শনিবার বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে স্বীকার করেছে সে নিজেই তার মেয়েকে হত্যা করেছে। ’
সংবাদ সম্মেলনে ওসি মো. আব্দুছ ছালেক জানান, দিগিন্দ নম (৩৫) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জের গুমগুমিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
কুলাউড়ায় তিনি কুঁচিয়া শিকার করে বিভিন্ন খাঁসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে বিক্রি করতেন। সেই সুবাদে পাঁচ মাস ধরে উপজেলার পৃথিমপাশার সুলতানপুর গ্রামে সাবেক শিক্ষক কামাল আহমদ চৌধুরীর বাড়িতে স্ত্রী আশুলতা ও তিন সন্তানসহ ভাড়া থাকতেন। ওই এলাকায় নিজেকে দিগেন্দ্র সরকার নামে পরিচয় দেন তিনি।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে আব্দুছ ছালেক বলেন, ‘দিগিন্দ মাদকাসক্ত ছিল। প্রায়ই মদপান করে স্ত্রী-সন্তানকে নির্যাতন করত। বেশ কয়েক দিন আগে থেকে ওই এলাকার বাসিন্দা সুরমান মিয়া ও কাজল আলীর সঙ্গে দিগিন্দর বিরোধ সৃষ্টি হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ঘটনার রাতে তার পরিবারের সবাই খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমাতে যায়। সবার অজান্তেই বড় মেয়ে পপিকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যায় সে। ঘরে পেছনে খালি জায়গায় মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে তার স্ত্রী সেখানে পপির লাশ দেখে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। ’
দিগিন্দ তার মেয়েকে হত্যায় সুরমান মিয়া ও কাজল আলী জড়িত দাবি করে মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন মামলার প্রধান অভিযুক্ত সুরমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওসি আরো বলেন, ‘বিস্কুটের প্রলোভন দেখিয়ে পপিকে অভিযুক্তরা হত্যা করেছে―এমন নাটক সাজায় দিগিন্দ। ওই বিস্কুটের মোড়কের কম্পানির নাম দিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে পার্শ্ববর্তী একটি মুদি দোকান থেকে দিগিন্দ নিজেই ওই বিস্কুট কেনে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে দিগিন্দ বিষয়টি স্বীকার করে। এ হত্যাকাণ্ডে প্রধান আসামি করে দিগিন্দকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন