নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের সকালের নাশতায় পরোটার সঙ্গে ডিমের অমলেট বড় প্রত্যাশিত। কিন্তু সেই অমলেটের দাম একলাফে দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এই কয়েক দিন আগেও একটি ডিমের অমলেট পাওয়া যেত ১৫ টাকায়। বর্তমানে হোটেলভেদে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
রান্না করা ডিমের তরকারিও যেন সোনার হরিণ। রান্না করা ডিমের তরকারি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, যা আগে ছিল ৩০ টাকা।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি খাবার হোটেল ঘুরে দেখা গেছে, ডিমের পাশাপাশি ভাত, মাছ-মাংসের তরকারির দামও অনেক বেড়েছে। হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, খাবারের দাম বাড়ানোয় তাঁদের বিক্রিও অনেক কমে গেছে।
রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের পাশে সোহাগ হোটেল। রিকশাচালক, ট্রাকচালকসহ বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিকরা এই হোটেলে খেতে আসেন। এই হোটেলে প্রতিদিন তিন বেলা খাবার খান রিকশাচালক মামুনুর রশিদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘ডিম ভাজি আগে ছিল ১৫ টাকা, এখন নিচ্ছে ২৫ টাকা। পরোটা পাঁচ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা, ছোট মাছ ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা, রুই মাছ আকারভেদে আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। তেহারি ৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯০ টাকা নিচ্ছে এখন। ’
তিনি বলেন, আগে সকালের নাশতা খেতে ৩০ টাকা লাগত। এখন লাগে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। দুপুরের খাবার ৪৫ টাকার মধ্যে হয়ে যেত। এখন লাগে ৯০ টাকা। আর রাতের খাবার আগে লাগত ৬০ টাকা, এখন লাগছে ৯০ টাকা।
পান্থপথের হক কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার রিপন হোসেন বলেন, ‘মুরগির গ্রিল আগে ছিল ৯০ টাকা, এখন ১০০ টাকা করা হয়েছে। প্রতি বস্তা চাল আগে ছিল দুই হাজার ৯০০ থেকে তিন হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৫০০ টাকা। আগে এক প্লেট ভাত ১০ টাকায় বিক্রি করতাম। বাধ্য হয়ে এখন ১৫ টাকায় বিক্রি করছি। তবে আমরা মাছের তরকারির দাম বাড়াইনি। রুই মাছ ১২০ টাকা, তেলাপিয়া আর কই ১০০ টাকা, বোয়াল ১৫০ টাকা, গুঁড়া মাছ ৮০ টাকা। আগেও এগুলোর দাম এমনই ছিল। আগে মুরগি ছিল ১২০ টাকা কেজি, এখন কিনছি ১৯০ টাকা কেজি। ফলে মুরগির মাংসের তরকারির দাম বাড়াতে হয়েছে। হোটেলে দাম বেশি বাড়ানো যায় না। কারণ আমাদের বিক্রি যত বেশি হবে তত লাভ বেশি। বিক্রি কম হলে লাভও কম। ’
রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় তাঁরাও দাম কিছুটা বাড়িয়েছেন। তবে তাঁদের দাবি, গত কয়েক দিনে খাবার বিক্রি কমে গেছে। বলা চলে অর্ধেকে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি বলেন, ‘যার যার পজিশন অনুযায়ী হোটেল মালিকরা দাম নির্ধারণ করেন। এ ক্ষেত্রে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করি না। এখন লবণ থেকে শুরু করে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। ফলে অনেকে খাবারের দাম বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। এ অবস্থায় বেচাকেনা ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে গেছে। লোকে এখন কম খাচ্ছে। যে ব্যক্তি ১০ হাজার টাকা বেতন পায়, বেতন তো সেই আগের ১০ হাজার টাকাই আছে। কিন্তু খরচ তো বেড়ে গেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন