রাজবাড়ীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেড় লাখ টাকা চুক্তিতে ফাঁস করেন কলেজশিক্ষক মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান ওরফে হিমেল। তিনি রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় করা মামলায় কলেজশিক্ষকসহ মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে মোট ৫ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ডা. আবুল হোসেন কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত মতিয়ার রহমান। তাঁর বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার রায়পুর গ্রামে।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হয় ২০ মে। পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ওই দিন ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর মাতুব্বর বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করেন।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ২০টি মুঠোফোন, ২টি সিমসহ ডিভাইস, ২টি ইয়ারফোন, আড়ি পাতা ডিভাইসের ছয়টি ছোট ব্যাটারি, পুরোনো ১টি মডেম, ১০ হাজার টাকা, হাতে লেখা পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর, পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের ফটোকপি, বিভিন্ন গাইড বই, সোনালী ব্যাংকের একটি ভিসা ডেভিড কার্ড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের একটি ডেভিড কার্ড ও দুটি স্যামসাং পাওয়ার ব্যাংক উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাজবাড়ী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র দাস বলেন, ডিভাইসের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ১৩ জনকে ওই দিনই আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে এক দম্পতি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অপর ১১ জনের ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত ১ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) প্রশিক্ষক মাঈনুল ইসলাম হাওলাদার কলেজশিক্ষক মতিয়ার রহমানের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র কিনেছেন বলে জানান। গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অফিস সহকারী জাভেদকে আটক করা হয়। সব মিলিয়ে এই মামলায় গ্রেপ্তার হন ১৫ জন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীতে মোট সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আটটি কেন্দ্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৬ হাজার ২০১ জন। তাঁদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৪ হাজার ৩৫৫ জন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন