রাষ্ট্রীয় হেফাজতে মুশতাক হত্যার বিচার, ছাত্র-শ্রমিক, রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল বাম ধারার ছাত্র সংগঠনগুলো। শুক্রবার বিকেলে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রকে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, দেশে একটি ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এটাই একমাত্র ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা নয়, এর আগে যারা ছিল তারাই এই ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থার বীজ বপন করে গেছে। তারা এই ধরনের আইন তৈরি করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর চরিত্রটা আসলে কি? এর চরিত্র হলো এটি মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চায় কিন্তু সবার মুখের ভাষা নয়, যাদের মুখের ভাষা তীর্যক, যারা এই রাষ্ট্রকে, সমাজকে পথ দেখাতে চায়, যারা সৃষ্টিশীল মানুষ, তাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চায়। আজকে মানব পাচারকারীরা হয় এই রাষ্ট্রের এমপি, সংসদ সদস্য।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে শাহবাগে সমাবেশ
Caption
মুশতাকের মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, তার মৃত্যুর পর আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের আগে সরকারের উচ্চ মহল থেকে যখন এ ধরনের বক্তব্য আসে, সেক্ষেত্রে তদন্ত রিপোর্ট এমনিতেই বাতিল হয়ে যায়।
রাষ্ট্রের অপকর্ম, অনাচার-দুর্নীতি, টাকা পাচারের কথা আমরা যারা আলোচনা করি সমালোচনা করি, এই রাষ্ট্র, এই সরকার তাদেরকে নিয়েই ভীত। কিন্তু যারা এই কাজগুলো করছে তারা সরকারের ছত্রছায়ায়।
কার্টুনিস্ট কিশোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি তার উপর কি ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। তার পুরুষাঙ্গে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে। যা কেবলমাত্র পাকিস্তান আমলেই কল্পনা করা যেত। যারা ১৯৭১ সাল নিয়ে এত বাড়াই করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এত বাড়াই করেন, তাদের মনের মধ্যেও আসলে পাকিস্তানি মানসিকতা ছাড়া আর কিছু নেই।
মশাল মিছিলে আটককৃত সাত শিক্ষার্থীর আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা লিপি বলেন, সাত শিক্ষার্থীর মামলার এজাহারে এভাবে লেখা হয়েছে, 'কতিপয় দুষ্কৃতিকারী হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশের হেলমেট ভেঙেছে, পুলিশের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পুড়ে দিয়েছে।' তাদের এমন জ্যাকেট, হেলমেট আগুন দেয়ার আগেই পুড়িয়ে যায়। তাহলে গুলি করলে কি হবে।
নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, দেশ যে উদ্দেশ্যে স্বাধীন হয়েছে, এসব আইন প্রয়োগ করে, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশ সেই পাকিস্তানি ভাবধারায় পরে আছে।
ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন