রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি লিফটের ভেতর থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রুবাইয়া ইয়াসমিন রিমু (২২) নামে ওই তরুণী কারমাইকেল কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, রিমুকে অপহরণের পর হত্যা করে লিফটের ভেতর লাশ ফেলে পালিয়ে গেছে এলাকার দুই যুবক। কিন্তু ওই দুই যুবকের পরিবারের দাবি, তাদের একজনের সঙ্গে প্রেমের সূত্র ধরে ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে নিহত হয়েছে তরুণী।
জানা যায়, সোমবার রাত ৮টার দিকে লিফটের ভেতর তাকে পড়ে থাকতে দেখেন হাসপাতালের লোকজন। সঙ্গে সঙ্গে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের কর্মচারীরা জানান, দুই যুবক তরুণীকে যখন নিচতলার লিফটে তুলছিলেন তখন তারা দেখেছেন। কিন্তু তারপর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নিহত রিমুর বাবা আবদুর রাজ্জাক নীলফামারীর জলঢাকা থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে নীলফামারী সদরের কচুকাটা তালুক-মানুষমারা গ্রামের বাড়ি থেকে কোচিং করতে টেংগনমারী যাওয়ার পথে রিমুকে অপহরণ এবং হত্যা করে লাশ মেডিক্যালে ফেলে যাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। আবদুর রাজ্জাক আমাদের সময়কে বলেন, করোনার কারণে কলেজ বন্ধ
থাকায় রিমু বাড়িতে থেকে কোচিং করছিল। প্রায়ই ফয়সাল (২৫) ও রিজভী (২০) কোচিংয়ে যাওয়া-আসার সময় আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। এ জন্য ফয়সালকে ডেকে অনেকবার বুঝিয়েছি। কিন্তু সে অনুরোধ শোনেনি। তারপরও তারা উত্ত্যক্ত করত।
ফয়সাল ঢাকার সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং রিজভী উচ্চমাধ্যমিক পাস। ঘটনার পর থেকে তারা দুজনই পলাতক রয়েছেন।
রিমুর পরিবারের অভিযোগ, তারা কথা না শোনার কারণে রিমুর ভাই ইমন কয়েক দিন আগে ফয়সাল ও রিজভীকে মারধর করেন। আর এর প্রতিশোধ নিতেই তারা রিমুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
তবে ফয়সাল ও তার বন্ধু রিজভীর পরিবারের দাবি, রিমু ও ফয়সালের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল। সোমবার দুজন মিলে মোটরসাইকেলে করে পাশের জলঢাকা উপজেলার রাজাহাট এলাকায় ঘুরতে যান। এ সময় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন রিমু। তাকে প্রথমে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং অবস্থার অবনতি হলে পরে রংপুর মেডিক্যালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। তবে হাসপাতালে তোলার সময় রিমু মারা গেলে লিফটের ভেতর লাশ রেখে ভয়ে ফয়সাল ও রিজভী পালিয়ে যান বলে দাবি তাদের পরিবারের।
জলঢাকা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, দুর্ঘটনার স্থান জলঢাকা থানা এলাকায় হওয়ায় এ ব্যাপারে সোমবার রাতেই নিহত ছাত্রীর বাবা আবদুর রাজ্জাক এ থানায় একটি মামলা করেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং অভিযুক্ত দুজনকে না পাওয়া পর্যন্ত প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে না। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন