একান্ত সাক্ষাৎকারে জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম
তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। টগবগে এই তরুণ গলায় ঝোলাতেন খুব সাধারণ একটা ক্যামেরা। আর তাতেই তুলেছিলেন ইতিহাসের স্মরণীয় কিছু ছবি। ১৯৫২ সালে ঘটে যাওয়া আমাদের মাতৃভাষা আন্দোলন তিনি দেখেছেন, জেনেছেন এবং সাথেই ছিলেন। বলছিলাম জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম স্যারের কথা। আমার পরম সৌভাগ্য যে আমি স্যারের সাথে প্রায় বছর দশেক ধরে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তার অফিস কক্ষে বসে অনেক গল্প শুনেছি, শিউরে উঠেছি অনেকবার বাংলা ভাষা আর বাংলাদেশ রাষ্ট্র গড়ার ইতিহাস শুনে।
বায়ান্ন সাল মানেই কি শুধু একুশে ফেব্রুয়ারি? শুধু একদিনের আন্দোলনেই কি আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে? নাহ, এর আগে এবং পরে ঘটে গেছে অনেক কিছুই। সময়ের পরিক্রমায় সেরকমই কিছু বলা-না বলা গল্প আজ আমরা শুনবো।
কালের কণ্ঠের পাঠকদের জন্য জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ইউল্যাব এর কমিউনিকেশন্স অফিসের ম্যানেজার আরিফুল হক।
প্রশ্ন: ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় আপনার বয়স কতো ছিল?
উত্তরঃ ১৯৫২ সালে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষের ছাত্র ছিলাম। বায়ান্ন থেকে পঞ্চান্ন সালের পুরো সময়টাতেই ভাষা আন্দোলন চলেছিল। আমাদের পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটাই ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রিক ছিল। আমি আটচল্লিশ সালে স্কুলের ছাত্র ছিলাম আর বায়ান্ন থেকে পঞ্চান্ন এই পুরো সময়টাই ভাষা আন্দোলনের সাথে ছিলাম, আর ফাঁকে ফাঁকে কিছু ছবি তুলেছি।
প্রশ্নঃ ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ও এই আন্দোলনের পুরো প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের কিছু বলেন।
উত্তরঃ ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে ঢাকায় পুরানা পল্টনে পাকিস্থান মুসলিম লীগ কাউন্সিলের একটা সভা হয়। সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন ঘোষণা করেন, 'পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।' অথচ এই খাজা নাজিম উদ্দিনই ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাথে একটা স্মারক স্বাক্ষর করেছিলেন যে, পূর্ব বাংলা আইন পরিষদ থেকে একটা প্রস্তাব পাশ করে পাঠানো হবে যে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে বাংলা।
ফেব্রুয়ারির শুরুর দিক থেকেই আমরা বিভিন্ন মিটিং, মিছিল, বিভিন্ন স্কুল-কলেজে যাওয়া শুরু করেছিলাম। এর মধ্যে একটা সমস্যা ছিল, রাজনৈতিক দলগুলো ভাষা আন্দোলনের সময় দ্বিধায় ভুগছিল, কারণ চুয়ান্ন সালের মার্চ মাসে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের নির্বাচন হবার কথা। তারা ভেবেছে এখন ভাষা আন্দোলন হলে, যদি নির্বাচনটা বন্ধ করে দেয়। তখন আটচল্লিশ কিংবা উনপঞ্চাশ সাল, আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব তখন জেলখানাতে ছিলেন। আর বাইরে যারা ছিলেন, তারা দেখলেন খাজা নাজিম উদ্দিনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে আমরা মুভমেন্ট শুরু করলাম। যেমন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোভাযাত্রা করে বিভিন্ন রাস্তা অতিক্রম, স্কুল-কলেজ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের জড়ো করা ইত্যাদি এগুলো সম্পূর্ণরূপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। বাইরের কোনো রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে না। এর মধ্যে আমরা জানতাম যে, একুশে ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের বাজেট অধিবেশন আছে। আমরা ১৯৫২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় যে সভা করি, সেখানেই ঘোষণা করা হয় ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখে আমরা রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করবো এবং আমরা পরিষদে গিয়ে স্মারকলিপি পেশ করবো, যেন বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হয়। মূলত, ৪ তারিখের সেই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ২১ তারিখের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে। একই সাথে আরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে ১০ কিংবা ১১ তারিখে আমরা একটা পতাকা দিবস করবো।
আবার, ওদিকে ১৫ তারিখ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান আর মহিউদ্দিন আহমেদ নামে বরিশালের এক রাজনীতিবিদ ছিলেন, তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অনশন-ধর্মঘট শুরু করলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, অনশন শুরু করলে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসবে এবং সেখানে আন্দোলনকারীদের সাথে যোগাযোগ হবে। এবং তাই-ই হলো। ১৫ তারিখের পরে তাদেরকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হলো। তখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রধান শক্তির জায়গা। সেখানে রাতে-রাতে বিভিন্ন ছাত্রনেতাদের সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের যোগাযোগ, দেখা-সাক্ষাৎ, আন্দোলন সম্পর্কে কথাবার্তা ও আলাপ-আলোচনা হতে লাগলো। শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর লেখা একটি গ্রন্থে এসব ঘটনার বিবরণ আছে। তখন তারা শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমেদকে ১৯ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে নিয়ে গিয়ে গোয়ালন্দ স্টিমারে করে ফরিদপুরে পাঠিয়ে দিল যেন যোগাযোগটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে জনতা বেশ গোলমাল-বিক্ষোভ করেছিল। এদিকে আমাদের প্রস্তুতিও চলতে থাকে। একুশে ফেব্রুয়ারির পরিকল্পনার জন্য সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১৯ তারিখে মিটিং করে একটি লাইব্রেরিতে। তারা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারলো না। তারপর ২০ তারিখ রাতে আরেকটি মিটিং করে আওয়ামী লীগ অফিসে। সেখানে সভাপতিত্ব করেন আবুল হাশেম সাহেব। সেখানে তর্ক-বিতর্ক চলতে থাকে। মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রনেতারা বলেন যে, তারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করবেন। কিন্তু অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সবাই বলেন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে, নতুবা সামনের ইলেকশন বন্ধ করে দেয়া হবে। আমরা ওখানে ভোটে হেরে গেলাম। তখন সিদ্ধান্ত হলো যে পরের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে দশটা বা এগারোটায় যে মিটিং হবে, সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রশ্নঃ একুশে ফেব্রুয়ারির দিন সকাল থেকে কী কী হয়েছিল এবং প্রথম গুলি কখন চালানো হয়?
উত্তরঃ একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে কলাভবন ঘেরাও, সামনে সব পুলিশ, গেট তালাবদ্ধ। আমরা সবাই দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকছি। আবার, মেডিক্যাল কলেজের দিকের যে দেয়াল ছিল, সেটাও আমরা ভেঙে ফেলেছিলাম। সাড়ে দশটা/এগারোটার দিকে গাজিউল হকের সভাপতিত্ত্বে মিটিং-এ শুরু হলো। সেখানে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদ থেকে দুজন প্রতিনিধি এলেন। একজন শামসুল হক, আরেকজন খন্দকার মোশতাক আহমেদ। এই দু’জন মিটিংয়ে এসে বললেন, আমরা যেন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করে আন্দোলন করি। কারণ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে গোলমাল হবে। তখন মুসলিম লীগ সরকার সুযোগ পাবে, ৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচন আসছে সেটা তারা বন্ধ করে দেবে। কিন্তু আমরা তাদের কথা শুনলাম না। ওখানে গাজীউল হক সভাপতিত্ব করেছিলেন, তারপর আব্দুল মতিন, অলি আহাদ উনারা প্রস্তাব করলেন যে, আমরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করব।
১৪৪ ধারা শুরু হয়েছিল ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেল থেকে। এই ১৪৪ ধারা ভাঙার জন্য গেটটাও ভেঙে ফেলা হলো। বাইরে তখন পুলিশ বোঝাই একেবারে। পুলিশ লাঠিচার্জ টিয়ার গ্যাস এগুলো মারছে। এগুলো চলতে লাগল এবং তার সাথে জনতাও যোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ থেকে। অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেছে আমাদের পক্ষে। মেডিক্যাল কলেজের সামনেটা আমাদের দখলে, মেডিক্যাল কলেজের যে দশটা ব্যারাক ছিল সেগুলোও আমাদের দখলে। কাজেই আমরা ভেতর দিয়ে এসেম্বলি পর্যন্ত চলে যেতে পেরেছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেলের বাজেট অধিবেশনের সময় ঘেরাও করে আমাদের দাবি পেশ করব যে, অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা বাংলা করতে হবে।
৩ টা ৩০ মিনিটের দিকে একটা দল মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল থেকে বের হয়ে অ্যাসেম্বলির দিকে যাবে ঠিক তখনই প্রথম গুলি হয়। প্রথম গুলি লাগে মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী রফিক উদ্দিনের মাথায়। আমার কাছে খুব সাধারণ একটি ক্যামেরা ছিল। আমানুল হক সাহেবের কাছে ফ্ল্যাশ গান ছিল, উনি তখন একটা ছবি তুলে রাখলেন। সেটাই ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিনের একমাত্র ছবি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবুল বরকত সেদিন খাকি ফুল প্যান্ট আর হাফ শার্ট পরা ছিল, সে গুলি খেল উরুতে আর তলপেটে, তখন তাকে ধরাধরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পানি খেতে চাইল। জরুরি বিভাগে যেতে যেতে বলল, বাড়িতে খবর দিতে। আমি একটা সাইকেল নিয়ে রওনা হলাম তার বাড়িতে খবর দিতে কিন্তু সেখানে কাউকে পেলাম না। সেই রাতেই অপারেশন টেবিলে আবুল বরকত মারা গেল।
প্রশ্নঃ এই অবস্থার মধ্যেও আমাদের প্রথম শহীদ মিনার কোথায় কিভাবে বানানো হয়েছিল ?
উত্তরঃ ২২ তারিখ সকাল বেলা মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল প্রাঙ্গণে গায়েবি জানাজা হল। এর পর আমরা নবাবপুর যাবো বলে ঠিক করেছিলাম। কার্জন হলের সামনে যেতে না যেতেই আমাদের ওপর গুলি চলল। হাইকোর্টের কেরানি সফিউর রহমান, রিকশাওয়ালা আওয়ালসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হলেন। সফিউর রহমান ২২ তারিখে শহীদ হলেন, তার কবর আজিমপুরে।
২৩ তারিখে রাতারাতি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররা রফিক উদ্দিন যেখানে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল সেখানে একটা শহীদ মিনার বানিয়ে ফেলল। মেডিক্যাল কলেজের মেয়েদের হোস্টেল বানাচ্ছিলেন একজন ঠিকাদার, নাম পিয়ারু সর্দার। তিনি ইট বালি সিমেন্ট দিয়েছিলেন। শহীদ মিনারটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২৪ তারিখ সকালে উদ্বোধন করা হল। এই শহীদ মিনার তখন হয়ে গেল বাঙলির তীর্থস্থান। ২৭ তারিখে আর্মি এসে বুলডোজার দিয়ে সেটাকে গুড়িয়ে দিল, তখন আমরা কালো কাপড় দিয়ে ঘেরাও করে একটা প্রতিকি শহীদ মিনার তৈরি করেছিলাম।
প্রশ্নঃ এই যে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল, আপনাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে আপনারা কিরকম প্রেরণা বা সহযোগীতা পেয়েছিলেন ?
উত্তরঃ ২৪ তারিখ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের শিক্ষকদের একটা সভা হয়, সেই সভার উদ্যোক্তা ছিলেন প্রফেসর মুনির চৌধুরী। সেখানে প্রফেসর মুনির চৌধুরী, প্রফেসর মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী- এঁরা বক্তৃতা করেন এবং এর পরপরই সম্ভবত ওই রাতেই মুনির চৌধুরী ও মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী গ্রেপ্তার হন। পিসি চক্রবর্তী নামে একজন শিক্ষক ছিলেন, আন্দোলনের সাথে তার কোনো যোগসূত্র ছিলো না। কিন্তু তিনি হিন্দু বলে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয় এবং জগন্নাথ কলেজের জনপ্রিয় শিক্ষক অজিত কুমার গুহ তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। কাজেই আমরা শিক্ষকদের সমর্থনও পুরো পেয়েছি। এবং ওনারা ৫৪ সালের আগে ছাড়া পাননি। ৫৪ সালে যুক্তফর্ন্ট জিতে যখন সরকার বানিয়েছিল তখন ওনারা ছাড়া পেয়েছিলেন।
প্রশ্নঃ আপনি এখন একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত আছেন, কিভাবে এবং কেন এর সাথে যুক্ত হলেন?
উত্তরঃ আমি ২০০৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরগ্রহণ করি। তখন আমি দৈনিক আজকের কাগজে লেখালেখি করতাম। সেই সূত্রে কাজী শাহেদ আহমেদ সাহেবের আমাদের সাথে আলাদা একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কাজী শাহেদ সাহেব বললেন তিনি একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে যাচ্ছেন, আমি যেন তার সঙ্গে যোগ দেই। উনি দু’বছর ধরে এটা নিয়ে অনেকগুলো সভা করেছিলেন এবং সেখানে শিক্ষাবীদ ও বুদ্ধিজীবিদের ডেকেছিলেন এবং আলাপ আলোচনা করছিলেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম নীতি কেমন হওয়া উচিত।
এসব আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই লিবারেল আর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডিয়া আসে। এছাড়াও কাজী শাহেদ আহমেদ সাহেবের ছেলে কাজী আনিস আহমেদ আমেরিকার লিবারেল আর্টস বিশ্ববিদ্যালয় ব্রাউনে লেখাপড়া করতো, আর আমি নিজেও তো একটা লিবারেল আর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়। সেদিক থেকে আমরা যদি একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলি তাহলে এটা লিবারেল আর্টস বিশ্ববিদ্যালয় করব বলেই সবাই সম্মত হই।
প্রশ্নঃ শিক্ষক হিসেবে, ভাষা সৈনিক হিসেবে এখন কার শিক্ষার্থীদেরকে কিছু কি বলতে চান?
উত্তরঃ আমরা যখন স্কুলের ছাত্র তখন ঢাকা বোর্ডের সেকেন্ডারি লেভেলের শিক্ষার মাধ্যম ছিল বাংলা। আমি সেন্ট গ্রেগ্ররি স্কুলের ছাত্র ছিলাম ওখানেও শিক্ষার মাধ্যম ছিল বাংলা। দেশভাগের পর যখন পাকিস্তান হলো তখন সেন্ট গ্রেগ্ররি, সেন্ট জোসেফ, হলিক্রস স্কুল এরা ইংরেজি মাধ্যম চালু করেছিল। আমার কথা হচ্ছে, মাধ্যম যাই হোক, মাতৃভাষা যেন উপেক্ষিত না হয়।
এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেক ভাগ্যবান, তারা স্বাধীন দেশের নাগরিক এবং তাদের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। আমাদের শিক্ষার্থীরা এখন পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে যাচ্ছে না। তারা ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, চায়না, রাশিয়াসহ যেখানেই যাচ্ছে ভালো করছে। তারা স্বাধীনচেতা হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের সম্মুখে সুবর্ণ ভবিষ্যৎ, তাদের যদি প্রতিভা থাকে তাহলে তারা অনেক ওপরে উঠতে পারবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন