রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ভুয়া চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের ২৩ প্রতারককে আটক করেছে র্যাব-৪। উদ্ধার করা হয়েছে ৫০ জন চাকরিপ্রার্থী ভুক্তভোগীকে।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত শাহ আলী, পল্লবী, কাফরুল এবং তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রটিকে আটক করা হয়।
র্যাব-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরী বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোপন তথ্যে জানা যায়, কিছু নামধারী ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি দল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানীতে পৃথক অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে শাহ আলীর লাইফ গার্ড সিকিউরিটি এন্ড সাপ্লাই লিমিটেড নামক কোম্পানি থেকে ১০০টি জীবন বৃত্তান্ত ফরম, ১৫টি চাকরির আবেদন ফরম বই, ৪টি রেজিস্টার, ৪টি সীল মোহর, ৭টি মোবাইল, ২০০টি ভিজিটিং কার্ড এবং নগদ ৫ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় তাসলিমা সুলতানা (৩০), সায়মা ইসলাম (২৪), মৌসুমী আক্তার (২৮), সাইফুল ইসলাম (৩০) ও রাকিব হোসেন (২০) নামের পাঁচ জনকে।
এছাড়া পল্লবীর বিজবন্ড আইটি লিমিটেড নামক কোম্পানি থেকে ৫০টি টাকা প্রাপ্তি রশিদ, ৩০০টি ভর্তি ফরম, ৬৫টি অঙ্গীকারনামা, ৭০টি চাকরির নিয়োগ ফরম, ২০০টি কমিশন ভাউচার, ৭টি রেজিষ্টার, ১টি প্যাড এবং ৪টি মানি রিসিট উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় সুমনা খাতুন (১৯), সোহেল ফরাজি (২৯) ও শামীমা আক্তার (২৮) নামের তিনজনকে।
কাফরুলের শাহ আলী প্লাজায় ডিজিট-৪ সিকিউরিটি এন্ড লজিস্টিকস সার্ভিসেস লিমিটেড নামক কোম্পানি থেকে ১০টি প্রচারপত্র, ৫টি আইডি কার্ড, ১০টি মনোগ্রাম এবং ৪০টি ভর্তি ফরম উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় কামরুজ্জামান (৩৩), মশিউর রহমান (২৭), সোহাগ (১৯), রুবেল (২৮), মমতাজ নায়রী (৪৪) ও শাহীনূর আক্তার (২৭) নামের ৬ জনকে।
তেজগাঁওয়ের বিজবন্ড আইটি লিমিটেড নামক কোম্পানি থেকে ১৫টি টাকা প্রাপ্তির রশিদ, ১টি ভর্তি ফরম বই, ৫টি চুক্তিপত্র, ১টি সীল, ৫০টি ভিজিটিং কার্ড, ৪৫টি আইডি কার্ড, ১৫টি জীবন বৃত্তান্ত এবং ১৫টি কমিশন ভাউচার উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৯ জন প্রতারককে। তারা হলেন- আব্দুল হামিদ (৩৮), আব্দুল জব্বার (৩৬), গাজিউর রহমান (২২), আব্দুস সালাম (৩৬), মাহামুদা খাতুন (৩০), মাসুম কবির (২৯), ফরিদ ইমরান (২৬), এনামুল হক (২৭) ও মাহমুদা খাতুন (৩০)।
আটকদের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা জিয়ারউর রহমান চৌধুরী জানান, আটকরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন নামে বেনামে ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠান খুলতো। এসব প্রতিষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মধ্যশিক্ষিত বেকার ও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল যুবক ও যুবতীদের আকর্ষণীয় ও উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ আদায় ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জনসাধারণের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন